নির্বাচন আগামী শীতে না গ্রীষ্মে?
বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, সাধারণত শীতকালে এ দেশে জাতীয় সংসদ (এনডি) নির্বাচন আয়োজিত হয়। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদের শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এর মধ্য দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসে।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি শাসনাধীন অবস্থায় ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে আওয়ামী লীগ, জামায়াত ইসলাম, জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচনে বয়কট করে। এর ফলে, নির্বাচিত সংসদ খুব কম সময় টিকে থাকার পর একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯৬ সালের জুনে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসে।
একইভাবে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর ১১তম এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, "মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।"
বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাস থেকে স্পষ্ট, নির্বাচনগুলো মূলত শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশনগুলো শীতকালীন সময়কে নির্বাচনের জন্য বেছে নিয়েছিল, কারণ এই সময়ে ভোটার উপস্থিতি সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালের তুলনায় বেশি হয়।