ইন্টারপোলের রেড নোটিশ তালিকায় থাকা বাংলাদেশিদের সম্পর্কে যা জানা যায়
ইন্টারপোলের রেড নোটিশ তালিকায় বর্তমানে ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের নাম রয়েছে। এ তালিকায় দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত কালা জাহাঙ্গীরের নামও রয়েছে। তবে তিনি বর্তমানে মৃত বলে ধারণা করা হয়।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এ তালিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
তবে হাসিনার বিরুদ্ধে এখনও কোনো রেড নোটিশ জারি করা হয়নি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলকে তা করতে আগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদি নোটিশ জারি হয়, তবে শেখ হাসিনা ওই ৬৩ জনের তালিকায় যুক্ত হবেন।
রেড নোটিশ হলো ইন্টারপোলের একটি আন্তর্জাতিক অনুরোধ, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করে নির্দিষ্ট দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
তবে এটি কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়; বরং আইনি প্রক্রিয়ার জন্য বৈশ্বিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে এটি।
উল্লেখ্য, রেড নোটিশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। ইন্টারপোলের ডেটাবেইজে পাবলিক এবং সীমাবদ্ধ রেড নোটিশ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার বেশিরভাগই কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন দেখতে পারেন।
তাহলে, তালিকায় থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে? উন্মুক্ত তালিকায় নাম থাকা বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এ তালিকার কিছু উল্লেখযোগ্য অপরাধ হলো:
আর্থিক অপরাধ: বড় পরিসরে জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ।
হত্যা ও সংগঠিত অপরাধ: হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকা বা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।
যুদ্ধাপরাধ: মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ।
দুর্নীতি: রাজনীতিবিদ ও হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ।
সন্ত্রাস: সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ।
ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে কয়েকজন বাংলাদেশিকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পিকে হালদার নামে বহুল পরিচিত প্রশান্ত কুমার হালদার। আর্থিক জালিয়াতি ও হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২২ সালের মে মাসে তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হন। তার আগে বাংলাদেশের অনুরোধে ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছিল।
২০১৮ সালে পুলিশ সদস্য হত্যার দায়ে অভিযুক্ত আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ২০২৩ সালে দুবাইয়ে আটক হন। তবে এখনও তিনি বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এছাড়া রেড নোটিশ জারির পর দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ আমানউল্লাহ আমানকে বিদেশে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য দেশে ফেরত আনা হয়।