জাহাজে খুন এখনও রহস্যাবৃত, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে পণ্যবাহী জাহাজে ৭ খুনের ঘটনার রহস্য এখনও জানা যায়নি। ঠিক কী কারণে তারা এমন হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন, তা নিয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে, পরিবারের দাবি এ হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত।
"ডাকাত নাকি পূর্ব শত্রুতার জেরে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা নিয়ে এখনও কিছু জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদি ডাকাতরা এই কাজ করতো, তাহলে মানিব্যাগ, মোবাইল ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করতো। আমাদের দাবি, দ্রুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক যাতে দেশে এমন ঘটনা আর না ঘটে," মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মোবাইল ফোনে এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন নিহত আমিনুল মুন্সির ভগ্নিপতি এনায়েত হোসেন তুষার।
তিনি বলেন, "সোমবার হাসপাতালে এসে মরদেহ শনাক্ত করি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তা না হলে এভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হতো না।"
এদিকে, আজ (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহত ৭ জনের মরদেহ নিতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আসেন স্বজনরা। এ সময় হাসপাতালের মর্গের সামনে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবরতারণা হয়। বাতাস ভারী হয়ে ওঠে মরদেহ চিহ্নিত করে নিতে আসা স্বজনদের কান্না-আহাজারিতে।
দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে লাশ নিতে আসা নিহত শেখ সবুজের ছোট ভাই রেজাউল করিম বলেন, "আমার বড় ভাই এবং মামা জাহাজে খুন হয়েছেন। রাতেই ফরিদপুর থেকে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে আসি। পরে মরদেহ দেখে শনাক্ত করি। মরদেহ দেখে পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।"
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে আজ (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম এস ইকবাল বলেন, "তদন্ত ছাড়া এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে। পরিবার মামলা না করলে পুলিশ মামলা করবে। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আনা হবে।"
এর আগে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় মালবাহী লাইটার জাহাজ আল-বাকিরা থেকে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও ২ জন মারা যান। একজন বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জাহাজটিতে মোট ৮ জন মানুষ ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।