কুষ্টিয়ায় খেলাপি ঋণ আদায়ে গ্রহীতার বাড়ির সামনে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবস্থান
কুষ্টিয়ায় খেলাপি ঋণ আদায়ে ঋণ গ্রহীতা দুই ব্যবসায়ীর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় কুষ্টিয়ার এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তাদের হাতে ঋণ গ্রহীতার ছবিযুক্ত ব্যানার দেখা যায়।
ঋণ আদায়ে সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগের উদ্দেশে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ায় ঋণ গ্রহীতা রাশিদুল ইসলামের বাড়ি ও পুলিশ লাইন্সের সামনে হাজী গলিতে ইউনুস আলীর বাড়ির সামনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। তারা দুজনই চালকল ব্যবসায়ী।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান, রাশিদুল চালকল ব্যবসায়ী। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বালিয়াশিশা এলাকায় আল্লাহর দান রাইস মিলের সত্ত্বাধিকারী। তিনি রাইস মিলের অনুকূলে ২০১০ সালে ব্যাংক থেকে প্রথমবার এক কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এরপর তিনি বছর বছর ধরে বিনিয়োগ বাড়াতে থাকেন। কিন্তু ব্যাংককে টাকা ঠিকমতো দেন না। বর্তমানে ব্যাংক তার কাছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাওয়া রয়েছে। ছয় মাস ধরে তিনি কোনো টাকা পরিশোধ করছেন না। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।
এদিকে একইভাবে কবুরহাট এলাকার ইফাদ অটো রাইস মিলের সত্ত্বাধিকারী ইউনুস আলী তার চালকলের বিপরীতে ব্যাংক থেকে ২০১৭ সালে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেন। বর্তমানে ব্যাংক তার কাছ থেকে ৩৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাবে। তিন বছর ধরে তিনি কোনো টাকা দেন না। বারবার নোটিশ দেওয়অ হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।
কর্মসূচি করতে দেখে আশপাশের বাসিন্দারা জড়ো হন। তারা ব্যতিক্রম এই কাজ দেখে কারণ জানতে চান। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা বিষয়টি সবাইকে জানান। বেলা ১১টার দিকে কোর্টপাড়া এলাকায় আধাঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩০ থেকে ৩৫জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ব্যাংকটির কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ ইউনুছ আলী বলেন, 'রাশিদুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ব্যক্তিগতভাবে তার বাড়ি ও অফিসে গিয়েছিলাম। তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তার কারণে শাখায় আমানতকারীদের টাকা দিতে পারছি না। কারণ আমানতের টাকা দিয়েইতো তাদের বিনিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।'
রাশিদুল ইসলামকে বাসায় পাওয়া যায়নি। এ জন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাড়ির অন্য বাসিন্দারা কথা বলতে রাজি হননি।
একইভাবে দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকের কর্মকর্তারা ইউনুস আলীর বাড়ির সামনে একই কর্মসূচি পালন করেন। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেও অবস্থান নেন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ব্যাংক কর্মকর্তা মইনুল হোসেন বলেন, শত চেষ্টা করেও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। সামাজিক চাপ প্রয়োগের জন্যই তারা এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।