মিয়ানমারের জান্তা, জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে: চীন
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর ফলে দুই দেশের সীমান্তের কাছে চলমান সংঘাত বন্ধ হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানান, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় উভয় পক্ষই চীনের শান্তি প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে।
মাও বলেন, 'মিয়ানমারের উত্তরে পরিস্থিতি শান্ত রাখা শুধু মিয়ানমারের নয়, এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেরও স্বার্থে। এটি চীন-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'
তিনি আরও বলেন, চীন উত্তর মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংলাপ ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এমএনডিএএ একটি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা নিজেদের এলাকা থেকে সেনাবাহিনীকে হটানোর জন্য লড়াই করছে। এই গোষ্ঠী থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ, যার অন্যান্য সদস্য হল তা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি।
২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে এই জোট চীন সীমান্তের কাছে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। গত জুলাইয়ে এমএনডিএএ জানিয়েছিল, তারা চীন সীমান্তের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জান্তা-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর অগ্রগতিতে চীন উদ্বিগ্ন। তারা সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে সেনাবাহিনীকে হটিয়ে দিয়েছে এবং মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় শহর মান্দালয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলে দেশটি গভীর সংকটে পড়ে।
চীন আশঙ্কা করছে, মিয়ানমারের সঙ্গে ২,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হলে তাদের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বেইজিং উত্তর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছিল। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই সেই চুক্তি ভেঙে যায়।