বিএসএফ-এর গুলিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে এক বাংলাদেশি আহত
আজ (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর গুলিতে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
আহত ব্যক্তির নাম হাবিল উদ্দিন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপী গ্রামের বিলাল উদ্দিনের ছেলে।
তাকে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, "আহত ব্যক্তির ডান পিঠে গুলির আঘাত রয়েছে। তাকে সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ড ২-এ ভর্তি করা হয়েছে।"
ডা. শংকর বলেন, "প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার পিঠে একটি গুলি রয়ে গেছে। তবে গুলির সংখ্যা একাধিক হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর সঠিক সংখ্যা জানা যাবে। তবে তিনি সচেতন আছেন এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল।"
হাসপাতালের বিছানা থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাবিল উদ্দিন জানান, তিনি একজন কৃষক। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি তার জমিতে সেচ দিতে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে একটি মোটর পাম্প দিয়ে আমি মাঠে পানি দিচ্ছিলাম। সে সময় ঘন কুয়াশার কারণে কোনো কিছু ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। কোনো ধরনের সতর্কতা বা সংকেত ছাড়াই বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ আমার দিকে গুলি চালায়। সেটি আমার পিঠে লাগে।"
আশপাশের কৃষকেরা দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে নিরাপদে স্থানে নিয়ে যান বলে জানান তিনি।
তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, "আজ (২৫ জানুয়ারি) ভোর ৩:৩০-৩:৪০ এর মধ্যে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) আওতাধীন তেলকুপী বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) অধীনস্থ এলাকায় ৭-৮ জন চিহ্নিত বাংলাদেশি চোরাকারবারি ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে ভারতের ভেতরে প্রায় ১৫০ গজ প্রবেশ করে চোরাচালানের কাজে জড়িত হয়।"
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, "বিএসএফ টহল দল তাদের লক্ষ্য করে ২-৩ রাউন্ড গুলি চালায়। গুলির শব্দ শুনে বিজিবি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, কিন্তু বাংলাদেশি চোরাকারবারিরা বাংলাদেশের ভেতরে পালিয়ে যায়।"
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, "পরে জানা যায়, চিহ্নিত চোরাকারবারি মো. হাবিল বিএসএফ-এর গুলিতে আহত হয়েছেন এবং রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।"
বিজিবি আরও জানায়, ভোর ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে তেলকুপী বিওপির অধীনস্থ ৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার ভেতরে কোনো বাংলাদেশি কৃষক উপস্থিত ছিলেন না।
এছাড়া, তেলকুপী বিওপি কমান্ডারের নেতৃত্বে দুটি বিজিবি টহল দল ওই এলাকায় সক্রিয়ভাবে টহল দিচ্ছিল।
এ ঘটনার পর বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি-স্তরের পতাকা বৈঠকে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি।