বিশ্বের সবচেয়ে ধনী গেমারদের রয়েছে ১২.৫ বিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ, তৈরি করেছেন বিশ্ববিখ্যাত গেম
ইগর বুখমান এবং দিমিত্রি বুখমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল গেমগুলোর স্রষ্টা। তারা ১২.৫ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদের মালিক। তাদের এই সম্পদ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গেমিং জগতের বড় বড় ব্যক্তিদের সম্পদকেও ছাড়িয়ে গেছে।
সোভিয়েত-পরবর্তী রাশিয়ার দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা এই দুই ভাই ২০২৪ সালে দ্য সানডে টাইমস গেমিং রিচ লিস্টে শীর্ষস্থান দখল করেছেন। এটি সম্ভব হয়েছে তাদের মোবাইল গেম ব্যবসা প্লেরিক্সের অসামান্য সাফল্যের কারণে। আর এ প্লেরিক্স তৈরি হয়েছিল তাদের দাদার দেওয়া একটি পুরোনো কম্পিউটার থেকে।
বুখমান ভাইরা পিউডিপাইকেও পিছনে ফেলেছে। এ পিউডিপাইয়ের ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ৩০ বিলিয়নের বেশি এবং তারা ক্যান্ডি ক্রাশ ও গ্র্যান্ড থেফট অটো-র মতো গেম তৈরি করেছে।
দ্য সানডে টাইমস গেমিং রিচ লিস্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে শীর্ষ ৩০ গেমিং মুঘলরা একত্রে আয় করেছেন ১৭.১ বিলিয়ন পাউন্ড। এর মধ্যে বুখমান ভাইদেরই ছিল ৭০ শতাংশ।
বুখমান ভাইরা তাদের দাদার উপহার দেওয়া পেন্টিয়াম ১০০ কম্পিউটার ব্যবহার করে নিজস্ব গেম ও স্ক্রিনসেভার তৈরি শুরু করেন। এখান থেকেই গড়ে ওঠে আজকের প্লেরিক্স সাম্রাজ্যের ভিত্তি।
যদিও প্লেরিক্স নামটি আপনার কাছে অপরিচিত হতে পারে, তবে আপনি হয়ত তাদের গেমগুলোর কোনো একটি খেলেছেন। যেমন- ফিশডম, গার্ডেনস্কেপ কিংবা টাউনশিপ। এগুলো হলো জনপ্রিয় ফ্রি মোবাইল গেম, যা অল্প সময়ের বিরতিতে খেলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং অগ্রগতি দ্রুত করার জন্য ইন-অ্যাপ পেমেন্ট বা 'মাইক্রোট্রানজাকশন' অফার করে।
স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুযায়ী, বুখমান ভাইদের সবচেয়ে সফল চারটি গেম প্রায় ১২.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ৪২ বছর বয়সী ইগর বুখমানের বর্তমানে লন্ডনের কেনসিংটনে যৌথভাবে অনেক সম্পত্তি রয়েছে।
২০২৪ সালের দ্য সানডে টাইমস গেমিং রিচ লিস্টে বেশ কিছু সফল ব্যবসায়ী আছেন। যাদের এ পর্যন্ত আসার বেশ কিছু গল্প আছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন রিকার্ডো জাক্কোনি। তিনি ক্যান্ডি ক্রাশ সাগা তৈরি করতে গিয়ে নিজের গাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করেছিলেন এবং থাকতে হয়েছিল বন্ধুর বাড়িতে। সেই তিনিই পরে ৪১০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ গড়েছেন।
মেল মরিস মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে ফ্লোরিং বিক্রেতার কাজ শুরু করেন। পরে অনলাইন ডেটিং সার্ভিস এবং ক্যান্ডি ক্রাশ সাগার মাধ্যমে বড়লোক হয়েছেন। তার বর্তমান সম্পদের মূল্য ৩১২ মিলিয়ন পাউন্ড। নিজের প্রোডাকশন কোম্পানি বিক্রি করার পর তিনি তার বেশিরভাগ অর্থ ডার্বি কাউন্টি ফুটবল ক্লাব-এ বিনিয়োগ করেছিলেন। যদিও সেখানে তিনি কম সফলই হয়েছেন।
তালিকার কিছু নারীদের মধ্যে একজন হলেন ডেবি বেস্টউইক। তিনি এ-লেভেলে পড়ার সময় নটিংহ্যামে একটি ভিডিও গেম শপে সামার জব করেই ১৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পদ অর্জন করেছেন। পরে তিনি তার পড়াশোনা বন্ধ করে দোকানটি চালাতে শুরু করেন এবং পরবর্তীতে টিম১৭ প্রতিষ্ঠা করেন।
লিস্টের আরেক ব্যক্তি পল ওয়েডজউডকে ১৫ বছর বয়সে তার দক্ষিণ লন্ডনের স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু পরে তিনি সিটি ব্যাংকের আইটি সেক্টরে চাকরির সুযোগ পান। পরে তিনি নিজেই স্প্ল্যাশ ড্যামেজ নামে একটি গেম উদ্ভাবন করেন। তার সম্পদের বর্তমান মূল্য ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড।
গেমারদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন জেন-জিদের আইডল কেএসআই। তিনি একাধারে একজন গায়ক, উদ্যোক্তা ও বক্সার। তিনি তার অনুসারীদের জন্য ফিফা খেলার স্ট্রিমিং শুরু করেছিলেন। তার সম্পদের মূল্য এখন ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি।