বয়স্কদের দেহেও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করেছে অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা
করোনাভাইরাসের হুমকি ঠেকাতে সর্বপ্রথম যে টিকা তৈরির উদ্যোগটি সম্ভাবনা দেখায়, সেটির উদ্যোক্তা ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তারা এখন ব্রিটিশ-সুইস মালিকানার ওষুধ প্রস্তুতকারক আস্ট্রেজেনেকার গবেষকদের সঙ্গে টিকা উন্নয়নের কাজ চালাচ্ছেন।
এই গবেষণার প্রথমদিকের কিছু পরীক্ষা- নিরীক্ষার ফল সম্পর্কে জানিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। প্রার্থী টিকাটি বয়স্কদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উদ্দীপ্ত করতে পেরেছে বলেই জানান বিজ্ঞানীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) চিকিৎসা বিজ্ঞানের শীর্ষ সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে তারা এ সাফল্য তুলে ধরেন। এমন সময় এ গবেষণা প্রকাশ করা হলো, যখন আগামী দুই- এক সপ্তাহের মধ্যেই সবশেষ পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মূল তথ্যাবলী প্রকাশ করবে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
বয়োবৃদ্ধদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল থাকায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তারা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেক সময় যা প্রাণহানির কারণও হয়। একারণেই তাদের মধ্যে কাজ করার অর্থ টিকাটি সকল মানুষকে জীবাণুর হাত থেকে স্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারবে। ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক নিবন্ধ অক্সফোর্ডের প্রাথমিক গবেষণা ফলাফলের এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে।
''যেকোনো টিকা নিয়ে চিন্তার বড় কারণ হলো সেগুলো বয়স্কদের শরীরে খুব একটা কার্যকর হয় না। তাই অক্সফোর্ডের সাফল্য, নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন,'' ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন ল্যানসেটের এডিটর-ইন-চিফ রিচার্ড হরটন।
এসময় তিনি বলেন, 'আশা জাগানিয়া এই তথ্য-উপাত্ত আমাদের সকলের জন্য কার্যকর টিকা তৈরির চেষ্টায় মূল সূত্র হিসেবে কাজ করবে।'
সর্বশেষ ও বড় আকারের ট্রায়াল শেষ করে এখন টিকা তৈরির দৌড়ে সবার চাইতে এগিয়ে রয়েছে দুটি মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ইঙ্ক এবং মডের্না ইঙ্ক। শেষ পরীক্ষায় তারা ব্যাপক সাফল্যও পায়। আস্ট্রাজেনেকা- অক্সফোর্ড টিকার তৃতীয় ট্রায়াল তেমন উচ্চ সফলতা অর্জন করতে পারে কিনা- তা জানার জন্যেই এখন অপেক্ষা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এব্যাপারে অক্সফোর্ড ট্রায়ালের প্রধান অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আন্ড্রু পোলার্ড এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন নিশ্চিতভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়েছেন, এব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেলেই তারপর ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হবে।
পোলার্ড আরও বলেন, নির্ধারিত মাত্রায় সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হওয়া মাত্র অক্সফোর্ড ও আস্ট্রাজেনেকা উচ্চ পর্যায়ের বিশ্লেষণের তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করবে। তারপর অন্যান্য বিজ্ঞানীদের পর্যালোচনার মাধ্যমে গবেষণার ব্যাখ্যা এবং পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হবে।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ