ডারউইনের ডায়েরি চুরি!
২০০১ সাল থেকেই চার্লস ডারউইনের ডায়েরী দুটির সন্ধান চলছে। এত বছরে কোনো সন্ধান না মিললেও গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার বিভাগ এক নতুন তথ্য জানায়। তারা বলেন, 'খুব সম্ভবত ডায়েরি দুটি চুরি হয়ে গেছে।'
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০টির বেশি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে শুধু কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারেই মোট বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। বহু বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিকেরা জানতেন চার্লস ডারউইনের বইদুটি এই বিশাল সাম্রাজ্যের মাঝে হারিয়ে গেছে। এ নিয়ে চলেছে অনেক অনুসন্ধান পর্বও। কিন্তু সমস্ত বই, কাগজপত্র ভালোভাবে তল্লাশির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার বিভাগ বইগুলো চুরি হয়েছে এমন সিদ্ধান্তে এসেছেন।
ডারউইনের বিবর্তনবাদের ধারণা ও তাঁর 'ট্রি অব লাইভ' এর স্কেচ ছিলো ডায়েরি দুটির একটিতে। ১৮৩৭ সালে এইচএমএস বিগলে সমুদ্রভ্রমণ থেকে ফিরে ডারউইন তাঁর চামড়ার নোটবুকগুলো লিখেছিলেন। এর মধ্যে একটিতে তিনি প্রজাতির সম্ভাব্য কয়েকটি বিবর্তনের রেখাচিত্র এঁকেছিলেন। পরে সেগুলোর আরও উন্নত চিত্র তিনি ১৮৫৯ সালে তাঁর 'অন দ্য অরিজিন অব স্পেসিস' বইয়ে উল্লেখ করেন।
২০০০ সালে ছবি তোলার জন্য ডায়েরির বাক্সটি লাইব্রেরি থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো।। বাক্সটিতে ছিলো ১৮৩৭ সালে ডারউইনের আঁকা ট্রি অব লাইভ স্কেচের ডায়েরীটি। পরবর্তীতে স্কেচটি গায়েব হয়ে যায়। এরপর ২০০১ সালে গ্রন্থাগারের বইগুলোর একটি সুবিন্যস্ত তালিকার জন্য বইগুলো স্থানান্তরিত করতে গিয়ে তারা বিষয়টি টের পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক এবং গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপক জেসিকা গার্ডনার জানান, 'দীর্ঘদিন ধরে খোঁজার পরেও আমরা ডায়েরি দুটি পাইনি। এটি আমার জন্য খুব আফসোসের বিষয়।'
তিনি আরো বলেন, 'বিষয়টির তদন্তের ব্যাপারে আমরা যতটা সম্ভব কাজ করে যাচ্ছি। কোনো চেষ্টাই আমরা বাদ রাখবো না। গ্রন্থাগারের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা এখন যথেষ্ঠ উন্নত করা হয়েছে।'
এ সম্পর্কে কেমব্রিজশায়ার পুলিশকে এবং ন্যাশনাল আর্ট লস রেজিস্টারে জানানো হয়েছে এবং পাশাপাশি ইন্টারপোলের মানসিক তথ্যশালাতে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে, বইগুলোকে পূর্বেই আধুনিকায়ন করা হয়েছিলো বলে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল লাইব্রেরীতে বইগুলো ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষিত রয়েছে।
ইতোমধ্যেই বইগুলোর অনুসন্ধান প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংগ্রহ চার্লস ডারউইনের এই রচনার সম্পূর্ণ অনুসন্ধান করতে পাঁচ বছর লেগে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক এবং গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপক জেসিকা গার্ডনার আরও বলেন,যারা এই গ্রন্থাগারে পূর্বে বা বর্তমানে কাজ করেছে এবং যারা বই ব্যবসা বা গবেষণার সাথে জড়িত তাঁরা এ বিষয়ে তথ্য জেনে থাকতে পারেন।
তাছাড়া কেউ যদি জেনে থাকে এ ব্যাপারে তাদের প্রতি সাহায্য চেয়ে তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন।