জেফ বেজোসের মতো সেন্টি-বিলিয়নিয়ারদের কথা জেনে নিন
শত কোটি মার্কিন ডলার সম-পরিমাণ সম্পদের অধিকারীরা হচ্ছেন বিলিয়নিয়ার। এমন ধনী আছেন বটে কয়েক শ'। কিন্তু, তাদের মুষ্টিমেয় এমন কেউ কেউ আছেন যাদের সম্পদ ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তাদেরকেই সেন্টি-বিলিয়নিয়ার বলা হয়।
মহামারির ঝাঁকুনিতে সাধারণ মানুষে যখন তাল সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে, বিশ্বমন্দার মুখে কর্মস্থলে সংকোচন দেখা দিয়েছে- ঠিক তখনই কিন্তু পুঁজিবাজার মূল্যায়নের সুবাদে বেড়েই চলেছে সেন্টি-বিলিয়নিয়ারদের প্রাচুর্য।
তবে, আমরা যেহেতু জেফ বেজোস বা ইলন মাস্ক নই, তাই উদ্বিগ্ন থাকাটাই আমাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ঘটনা।
যেমন; সেন্টি-বিলিয়ননিয়ারদের একজন মাস্কের কথাই বলা যাক। তিনি ছিলেন ভিন্ন নৌকার যাত্রী। দক্ষিণ আফ্রিকান বংশদ্ভূত এই মার্কিন ধনীর কোম্পানি টেসলার বাজার মূল্যায়ন বাড়ায় তার সম্পদ উন্নীত হয়েছে ১৪ হাজার ৭শ' কোটি ডলারে।
মাস্কের মতো এমন সেন্টি-বিলিয়নিয়ার পুরো বিশ্বে আছেন মোট পাঁচজন। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স সেটাই তুলে ধরেছে গত বুধবার (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায়।
তবে এই ধরনের ধনীদের মধ্যে যিনি সবার সেরা, তার তুলনায় মাস্ক কিন্তু বেশ পিছিয়ে। জেফ বেজোসের মোট সম্পদমূল্য এখন ১৮ হাজার ২০ কোটি ডলার। কিছুদিন আগে অবশ্য তা ২০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। সেই উত্থান কমার পরও মাস্ক বেজোসের তুলনায় বেশ দরিদ্রই! বলা চলে।
পৃথিবীর বুকে এখন বেজোসের চাইতে ধনী আর কেউ নেই। মহাশূন্য যান ও রকেট তৈরিতে মাস্কের মতো বেজোসেরও একটি ব্যক্তি মালিকানার কোম্পানি আছে।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের মতে, আজ পর্যন্ত যতো সেরা ধনী পৃথিবীতে ছিলেন বলে জানা যায়, তাদের সকলের চাইতেও বড় ধনী হলেন জেফ বেজোস।
তার সম্পদ অবিশ্বাস্য পরিমাণের বলে মন্তব্য ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স প্রস্তুতে সহায়তাকারী ডেভন পেন্ডেলটন।
''পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের জিডিপির চাইতে তার সম্পদের মাত্রা বেশি। এমনকি মার্কিন বাজারের সেরা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত সূচক এসঅ্যান্ডপি-৫০০ এ থাকা অনেক প্রতিষ্ঠানের বাজার মূল্যায়নের চাইতেও তিনি বেশি ধনী।''
আরেকটু স্পষ্ট করে তুলনা দিলে বলা যায়, হাঙ্গেরি বা ইউক্রেনে উৎপাদিত মোট পণ্যের চাইতেও বেশি সম্পদের মালিক তিনি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বেজোসকে নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
মাস্ক ও বেজোস-সহ অন্য চার সেন্টিবিলিয়নিয়ার হচ্ছেন; মাইক্রোসফটের বিল গেটস, ফরাসি অভিজাত পণ্য ব্যবসায়ী বের্নাদ আর্নল্ট এবং ফেসবুক নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।
শেষোক্ত এই তিনের মধ্যে বিলের সম্পদ ১২ হাজার নয় শয়' কোটি ডলার। আর্নল্ট ১১ হাজার কোটি এবং জাকারবার্গ সাড়ে ১০ হাজার কোটি ডলারের মালিক।
অতি-ধনীদের মধ্যে সব-সেরাদের এই সম্পদ বৃদ্ধির প্রবণতা এমন সময় ঘটছে যখন মহামারির কারণে কাজের সুযোগ হারিয়েছেন লাখ লাখ ব্যক্তি। অনেক পরিবার দৈনিক চাহিদা পূরণেও ব্যর্থ হচ্ছে।
তবে মহামারির কারণেই জমে উঠেছে প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর ব্যবসা। এখন আগের চাইতে অনেক বেশি অনলাইন ভিডিও দেখা হচ্ছে, কেনাকাটাও বেড়েছে ভার্চুয়াল বিপণন সাইটগুলোতে। একারণেই, পুঁজিবাজারে চাঙ্গা হয় এসব কোম্পানির দর । এতে বিপুল সংখ্যক শেয়ারের মালিক মূল উদ্যোক্তাদের সম্পদ আরো ফুলেফেঁপে ওঠে। এমনকি, ব্লুমবার্গ বিনিয়নিয়ার ইনডেক্সে থাকা শীর্ষ ১০ ধনী হচ্ছেন মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবসায়ী।
চলতি বছর নতুন হিসাবে সেন্টি-বিলিয়নার সারিতে যুক্ত হয়েছে মাস্ক ও জাকারবার্গ। টেসলা ও ফেসবুকের বাজার মূল্যায়ন চলতি বছর যথাক্রমে; ৬৭৭ ও ৩৯ শতাংশ হারে বেড়েছে।
- সূত্র: এনপিআর