আমার ছেলেকে ক্ষমা করে মুক্তি দিন: প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্রাটের মা
যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে ক্ষমা করে মুক্তি দিতে ও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তার মা সায়েরা খাতুন।
যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি সম্রাটের মা রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি মানবতার মা। সম্রাট একজন ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী। একজন মা হিসেবে আমার অনুরোধ, আপনি তার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে মুক্তি দিন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে রক্ষা করুন।”
পরবর্তীতে মায়ের পক্ষ থেকে সম্রাটের বোন ফারহানা চৌধুরী শিরিন সাংবাদিকদের সামনে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “গত ৬ অক্টোবর আমার সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে স্থান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, সে স্থান থেকে কোনো প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায়নি। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম সম্রাটকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টা ১৭ মিনিট তার অফিস তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলার সময় কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ার সম্প্রচারে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে। অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ওই সব ব্যাগ দেখা যায়নি।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখিত ওই বক্তব্যে আরও বলা হয়, “সম্রাট আপনার কর্মী। সে আপনার সন্তানতুল্য। সম্রাট আপনার সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী নয়। সে জাতির পিতার আদর্শের কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে সে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছে।”
সম্রাটের কার্যালয় থেকে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারকে ‘পরিকল্পিত সাজানো নাটক’ উল্লেখ করে সম্রাটের মায়ের দাবি, “আটকের ১০ দিন আগ থেকে কার্যালয়ে যায়নি সম্রাট। সেখানে কোনো মদ, ইয়াবা ও অস্ত্র ছিল না। অসুস্থ থাকায় সে অন্য কোথাও ছিল।”
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া সম্রাটের ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রসঙ্গে সম্রাটের মা বলেন, ‘আমরা এখনও রায়ের কোনো কপি পাইনি। ক্যাঙ্গারু আমাদের দেশের নয়। তাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এটি পড়তে পারে না।”
এর আগে, ৬ অক্টোবর রাতে ফেনীতে সম্রাটের বোন ফারহানা চৌধুরী কর্তৃপক্ষের কাছে তার ‘নির্দোষ’ ভাইয়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন।
জেলার পরশুরাম থানার পূর্ব সাহেবনগরে তাদের বাড়িতে ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ফারহানা বলেন, “সম্রাট অসুস্থ। ও হার্টের রোগী। তার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে।”
সে দিনই সম্রাটের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
‘জুয়া খেলা সম্রাটের নেশা’-- সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরীর গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যটি ‘মিথ্যাচার’ বলে দাবি করেন তিনি।
ফারহানা বলেন, “শারমিন চৌধুরী একজন লোভী নারী। সব সময় টাকার জন্য আমার ভাইকে যন্ত্রণা দিত। এ জন্য সম্রাট তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ভাই নির্দোষ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে যুবলীগ নেতা সম্রাটকে আটক করে র্যাব। পরে সম্রাটের কাকরাইল অফিস থেকে ক্যাঙ্গারুর চামড়া উদ্ধারের পর র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়।
ওই দিনই তাকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।