বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস যথাযথ নয়: অর্থমন্ত্রী
চলতি বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ব্যাপক হারে কমবে বলে বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তা যথাযথ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
"সংস্থাটি কখনো-সখনো হুট করে একটি অনুমান ঘোষণা করে এবং পরে আবার সে অবস্থান থেকে সরেও আসে," আজ বুধবার (৬ জানুয়ারি) সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এভাবেই তার প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ভিত্তিক দাতা গোষ্ঠীটি চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১.৬ শতাংশ হবে বলে অনুমান করছে। সংস্থাটির এ ঘোষণার প্রতিক্রিয়াতেই অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। কারণ; সরকারের বাজেট পরিকল্পনায় ৭.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের আভাসকে একেবারেই বাতিল করে দেন।
অর্থনীতির পারফরম্যান্স সম্পর্কে এসময় তিনি জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে।
"সবখাতেই ভালো পারফরম্যান্স লক্ষ্যণীয়, শুধু আমদানি কমেছে। আর আমদানি কমায় সরকারের রাজস্বে কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে," অর্থমন্ত্রী যোগ করেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার এ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমদানি রাজস্ব আদায়ে উন্নতি আনতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেবে।
কালো টাকা বৈধকরণ:
মহামারীর সময় দেশে কিছু ব্যক্তি ১০ হাজার কোটি টাকার অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করেছেন বলে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে- তা ইতিবাচক বলে এর পক্ষ নেন অর্থমন্ত্রী।
"এতো খুবই ভালো সংবাদ। কারণ, এতে দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি ও উদ্দীপনা তৈরি হবে। সে হিসেবে বলা যায়, আমাদের লক্ষ্য সফল," তিনি বলছিলেন।
মুস্তফা কামাল জানান, দেশের বাইরে পাচার বন্ধেই সরকার বাজেটে কালো টাকা সাদাকরণে একটি বিশেষ সুবিধা যুক্ত করে।
"আমাদের নিজস্ব নীতির কারণেই অনেক টাকা কালোতে পরিণত হয়," তার কারণ হিসাবে জানান, আগে লোকজন ফ্ল্যাট বা জমি কেনার পর তা অতিরিক্ত নিবন্ধন খরচ আর অন্যান্য স্ট্যাম্প শুল্কের কারণে সম্পত্তি নিবন্ধনে আগ্রহী ছিলেন না ।
তার মতে, সরকার স্ট্যাম্প কর এবং নিবন্ধন খরচ কমানোয় লোকজন এখন আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে তার নিবন্ধন নিতে উৎসাহী হচ্ছে।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আয়কর দাতা এবং আয়কর রিটার্ন জমাদাতাদের মধ্যে সংখ্যার যে বিশাল ফারাক তা সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটিকে একটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির আওতায় আনার আগে দূর করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে আয়কর রিটার্ন জমাদাতা রয়েছেন ৫০ লাখ কিন্তু প্রকৃত করদাতা রয়েছেন ২৫ লাখ যা তার অর্ধেকেরও কম।