ট্রাম্পের ফেসবুক-টুইটার অ্যাকাউন্ট জব্দ
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন তাণ্ডবের পর টুইটার কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের তিনটি টুইট সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। কংগ্রেসে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বন্ধ রাখতে সমর্থকরা এক প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে সেখানে হামলা করে।
ফেসবুক ও টুইটার ইন্টারনেট কোম্পানি গতকাল বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। ইউএস ক্যাপিটেলে হয়ে যাওয়া দাঙ্গার মধ্য দিয়েই ট্রাম্প তার ভিত্তিহীন মতামত এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াতে থাকায় টেক জায়ান্টরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের দাঙ্গায় এক নারীকে ভবনের ভেতরেই গুলি করা হয় এবং তিনি মারা যান।
তারপর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ টুইটবার্তায় ঘোষণা দেয়, তারা দুটি নীতিভঙ্গের দায়ে ২৪ ঘণ্টার জন্য ট্রাম্পের পেজ ব্লক বা বন্ধ করে দেবে।
টুইটার কর্তৃপক্ষ ১২ ঘণ্টার জন্য ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় এবং তারা জানিয়েছে, ট্রাম্প তার আগের টুইটগুলো সরিয়ে না ফেললে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে রাখবে। তার মানে, @realDonaldTrump অ্যাকাউন্ট থেকে আর টুইট করতে পারবেন না তিনি।
এছাড়াও অ্যালফাবেট গুগলের অধীনে থাকা ফেসবুক ও ইউটিউব ট্রাম্পের একটি ভিডিও সরিয়ে দিয়েছে, যেখানে তিনি বারবার দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে, যদিও তিনি বিক্ষোভকারীদের ঘরে ফিরে যেতে বলেছেন।
এই ভিডিও ইনস্টাগ্রাম থেকে সরানো হয়েছে এবং ট্রাম্পের ইনস্টাগ্রাম আইডিও ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ইনস্টাগ্রামের প্রধান অ্যাডাম মোসেরি।
অবশ্য ইউটিউব এরপর তার অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ট্রাম্প তার মিথ্যা ছড়ানোর জন্য এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করায় টেক কোম্পানিগুলো পুলিশের চাপের মুখে পড়েছে। এমনকি তারা সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকেও কল পেয়েছে ট্রাম্পের আইডি বন্ধ করার জন্য।
ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা প্রতিনিয়তই নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে মনে করে এমন দাবী করে যাচ্ছেন, যার কোনো প্রমাণ নেই। একটি টুইটবার্তায় ট্রাম্প ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের 'সাহসে'র অভাব আছে বলে জানান।
সহিংসতার আশঙ্কা
ফেসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট গাই রোজেন বলেন, ট্রাম্পের ভিডিওটি চলমান দাঙ্গায় আরও নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে, তাই সেটি সরানো হয়েছে। ইউটিউবও একই কথা জানিয়েছে বলেছে, ট্রাম্প প্রচারিত কন্টেন্ট তাদের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।
ফেসবুক ও টুইটার দুই জায়গায়ই তার এই ভিডিও যেন কম ছড়িয়ে পড়ে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে কীভাবে নজর রাখা হয়েছিল, সে সম্পর্কে জানতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের ডজন ডজন স্টাফকে ডাকা হয়েছে।
দেশটির নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
গবেষক ও নানা জনসাধারণের মতানুযায়ী, কয়েক সপ্তাহ ধরেই ট্রাম্প সমর্থকদের ভেতরে এই দাঙ্গার পরিকল্পনা চলছিল ও তারা এই ব্যাপারে তথ্য ছড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করেছে।
- সূত্র: রয়টার্স