নিষ্পাপ, সংযত মানুষ ছিল সুশান্ত সিং রাজপুত: বম্বে হাইকোর্ট
বৃহস্পতিবার প্রয়াত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের দুই বোন মীতু সিং ও প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের আবেদনের শুনানি সম্পন্ন হয় বম্বে হাইকোর্টে। রিয়া চক্রবর্তীর দায়ের করা এফআইআর খারিজ করে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে গত সেপ্টেম্বরেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুশান্তের বোনেরা।
এদিন বম্বে হাইকোর্ট এই মামলার রায় সংরক্ষিত রেখেছেন, তবে আদালত নিজের পর্যবেক্ষণে সুশান্তকে সংযত, নিষ্পাপ এবং বড় মনের মানুষ বলে উল্লেখ করেন।
'ওনার মুখ দেখে যে কেউ বলবে উনি নিষ্পাপ ছিলেন,' এদিন এ কথাই জানান বিচারপতি এসএস শিন্দে এবং এমএস কার্নিকের ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ১৪ জুন বান্দ্রার মাউন্ট ব্লাঙ্ক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে মুম্বাই পুলিশ; যদিও সেই তত্ত্বে সন্তুষ্ট ছিল না এসএসআর ভক্তরা।
আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ছয় মাস ধরে তদন্তের পরেও এখনও সিবিআই নিশ্চিতভাবে জানায়নি আত্মহত্যাই করেছিলেন সুশান্ত নাকি খুন করা হয় তাকে।
অন্যদিকে সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী গত ৭ সেপ্টেম্বর এনসিবির হাতে গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মুম্বাই পুলিশে সুশান্তের দুই বোন মীতু সিং ও প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার পালটা অভিযোগ দায়ের করেন।
সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিং বৃহস্পতিবার আদালতে জানান, টেলিফোনে যোগাযোগ করে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে ওষুধ দেওয়াটা আইসিএমআর-এর নির্দেশিকার অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া এই বিষয়টি সিবিআইয়ের মূল তদন্তের অন্তর্ভুক্ত, এর জন্য পৃথক এফআইআরের প্রয়োজন নেই।
অন্যদিকে, সওয়াল-জবাব পর্বে রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে দাবি করেন, রিয়া জানতেন সুশান্ত কিছু ওষুধ নিচ্ছেন, যার জেরে দুজনের মধ্যে সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু সেই সময় রিয়া প্রেসক্রিবশনের ব্যাপারে কিছুই জানত না। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে এই প্রেসক্রিবশন ফাঁস হলে রিয়া সেটি উপলব্ধি করতে পারেন।
রিয়া চক্রবর্তী তার আইনজীবী মারফত আদালতকে জানিয়েছেন, 'আমি ওর (সুশান্ত) পরিচারককে জানিয়েছিলাম, ও যে ওষুধ খাচ্ছে তার সঙ্গে মাদক মেশাচ্ছে। এটা একটা ভয়ঙ্কর ককটেল। ওর মেডিসিন নেওয়ার বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম না এর কোনো প্রেসক্রিবশনও ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটি লিক হওয়ার পর আমি জানতে পারি প্রিয়াঙ্কা সিং (সুশান্তের বোন) এই প্রেসক্রিবশন পাঠিয়েছিলেন। আমার উপলব্ধি, সেটা ওর আত্মহত্যার কারণ হতে পারে। ওই চিকিৎসক আগে কোনোদিন সুশান্তকে কোনো ওষুধ দেননি, বা পরীক্ষা করেননি। টেলিমেডিসিন দেওয়া যেতে পারে; কিন্তু এর জন্য পূর্বে সেই চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।'
বম্বে হাইকোর্ট এদিন এই মামলার সঙ্গে জড়িত সকল পক্ষকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।