‘বিশ্বে’র সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচির জন্যে ভ্যাকসিন ডোজের চালান পৌঁছানো হচ্ছে ভারতের নানা প্রান্তে
১৩০ কোটি জনসংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে চায় ভারত। ভারতীয় সরকার একে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণ-টিকাদান কর্মসূচি দাবি করছে। এই লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) থেকে দেশটির নানা প্রান্তে টিকার ডোজ পৌঁছে দেওয়া শুরু করেছে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স।
আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে উচ্চ-ঝুঁকিতে থাকা ৩০ কোটি নাগরিককে টিকার আওতায় আনতে চায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। প্রথম ধাপের এই উদ্যোগ শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার থেকেই।
প্রথমে টিকাগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন; ৩ কোটি স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কর্মী ও সম্মুখভাগে জরুরি সেবা দেওয়া অন্যান্যরা। তারপর পাবেন ৫০ বছরের বেশি বয়সী এবং যারা আগে থেকেই অসুস্থতার কারণে উচ্চঝুঁকিতে আছেন এমন ২৭ কোটি নাগরিক।
মঙ্গলবার উড়োজাহাজের মাধ্যমে সাড়ে ৫৬ লাখ টিকার ডোজ প্রধান প্রধান কিছু শহরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এক টুইট বার্তায় বিষয়টি জানান, দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে টিকা বিতরণকে তারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
রাজ্যটির উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল বলেন, "বিমানবন্দর থেকে টিকার চালান দ্রুত হিমাগারে নেওয়া হবে এবং সেখান থেকে টিকাদানের বুথগুলোতে পৌঁছে যাবে।"
এর আগে গত সোমবার পুনেভিত্তিক ভ্যাকসিন উৎপাদক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউড অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে একটি ক্রয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এর আওতায় সেরাম উৎপাদিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত কোভিশিল্ড টিকা কেনা হবে। এক সপ্তাহের কিছু আগে এটির অনুমোদন দিয়েছিল ভারতীয় ওষুধ প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ডোজপ্রতি ২০০ রুপি বা ২.৭২ মার্কিন ডলার মুল্যে ভারত সরকারকে প্রথমে ১ কোটি ১০ লাখ ডোজ সরবরাহ করবে সেরাম।
ভারতের পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে যে, পোলিও টিকাদানের সফল অভিজ্ঞতা তারা কোভিড-১৯ টিকাদান সুষ্ঠুভাবে কার্যকর করবেন।
তবে, তৃণমূল পর্যায়ে যোগাযোগ অবকাঠামোর দুর্বলতা এবং রোগীর চাপে পর্যদুস্ত চিকিৎসা কেন্দ্রকে তারা সবচেয়ে বড় বিপত্তি বলে উল্লেখ করেন। একারণে, কর্মসূচির জটিলতা বাড়বে বলেও শঙ্কা তাদের।
প্রায় দেড় কোটি সংক্রমিত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ কোভিড প্রভাবিত রাষ্ট্র ভারত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন কেস সংখ্যা পড়তির দিকে। এরপরও, অর্থনীতি পুরোদমে সচলের তাগিদে সকল নাগরিককে টিকার আওতায় আনার জরুরি লক্ষ্যে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
আজ মঙ্গলবার ভারতে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যায় আরও ১২,৮৫৪ জন যোগ হয়। অবশ্য, এটা বিগত কয়েক মাসের দৈনিক সংখ্যার চেয়ে সবচেয়ে কম। কোভিড-১৯ এপর্যন্ত এক লাখ ৫১ হাজার ভারতীয়ের মৃত্যুর কারণ হয়েছে।
- সূত্র: রয়টার্স