ভারতের পাঠানো কোভিড-১৯ টিকার প্রথম চালান পেল মিয়ানমার
ভারতের পাঠানো কোভিড-১৯ টিকা উপহারের প্রথম চালান পেয়েছে মিয়ানমার। শুক্রবার দেশটি ১৫ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের চালান পায়, যা দিয়ে সাড়ে ৭ লাখ নাগরিককে টিকা দেওয়া হবে। ফলে কোভিডে পর্যুদস্ত দেশটি অতি-জরুরি সহায়তা পেল।
এশিয়ার নানা দেশে, বিশেষ করে প্রতিবেশীদের লাখ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দিচ্ছে ভারত। এতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে ভূয়সী প্রশংসা পেয়ে এবং চীনের আঞ্চলিক প্রভাবকেও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করছে নয়াদিল্লি।
এর আগে, ভারতের পুনেভিত্তিক সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ডোজ উপহার পায় বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটান।
পরের ধাপে টিকা প্রাপ্তির তালিকায় থাকা দেশের মধ্যে ছিল মিয়ানমার ও সেশেলস দ্বীপপুঞ্জ। চীনের আগে দ্রুতগতিতে প্রতিবেশীদের টিকা সরবরাহে অঙ্গীকার করে এগিয়েই রইল ভারত। নিজস্ব প্রতিশ্রুতির বাস্তব উদাহরণ দিতেই দিল্লি ভ্যাকসিন ডোজ উপহার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
শুক্রবার টিকার চালান পৌঁছায় মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দরে। সেখানে উপস্থিতি ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সৌরভ কুমার। তিনি বন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, "এটি মিয়ানমারকে দেওয়া ভারতের উপহার।"
মিয়ানমারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খিন খিন গি জানান, আগামী সপ্তাহে বিতরণ শুরুর আগে আপাতত চালানটি ইয়াঙ্গুনে বিশেষ হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে।
নারী মুখপাত্রটি বলেন, "প্রথম অগ্রাধিকার পাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং তারপর বয়স্কদের দেওয়া হবে।" এসময় তিনি মিয়ানমারে মোট ১ লাখ ১০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
টিকার চালান এলেও জনগণকে অসতর্ক না হওয়ার পরামর্শ দেন খিন খিন গি। একইসঙ্গে, সকলকে ভাইরাসের আরও বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বানও জানান।
এদিকে মিয়ানমার সরকারের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি 'সকল নাগরিকের প্রতি সরকারিভাবে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসায় সহায়তা করার অনুরোধ' করেন।
মহামারির প্রথমদিকে সংক্রমণ সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও, দ্বিতীয় ঢেউয়ে পর্যুদস্ত মিয়ানমার। কোভিড-১৯ সংক্রমণে প্রতিবেশী দেশটিতে ২ হাজার ৯৯৭ জনের মৃত্যু এবং এক লাখ ৩৫ হাজার ৭২১ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সূত্রে। তবে সরকারি পরিসংখ্যানের বাইরে প্রকৃত অবস্থা আরও নাজুক বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে টিকা সহযোগিতা মিয়ানমারকে সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
বিগত কয়েকদিনে সংক্রমণ হার কমছে- এমনটা দেখা গেলেও, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার সংখ্যা যথেষ্ট না হওয়াকেই প্রধান কারণ বলছেন।
ইতোপূর্বে, গত সপ্তাহে মিয়ানমার সফরে এসে চীনে তৈরি ভ্যাকসিনের ৩ লাখ ডোজ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং-ই।
- সূত্র: রয়টার্স