রূপকথার রাজকুমার হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতালেন মেয়ার্স
ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। সেই অনিশ্চয়তার প্রতিটা মোড়ে মোড়ে লুকিয়ে থাকে রোমাঞ্চ। যে রোমাঞ্চে কেউ ট্র্যাজিক হিরো তো আবার কেউ রূপকথার রাজকুমার। চট্টগ্রাম টেস্টে মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল হকরা যদি হন ট্র্যাজিক হিরো, তবে কাইল মেয়ার্স রূপকথার রাজকুমার।
ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই নায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। অভিষেক ইনিংসেই অনেক রেকর্ড পায়ে লুটিয়ে দলকে ঐতিহাসিক এক জয় এনে দিয়েছেন মেয়ার্স। তার ২১০ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংসে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উপমহাদেশে এটাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ রান তারা করে জেতার রেকর্ড।
ব্ল্যাকউডকে ফেরালেন নাঈম
এনক্রুমাহ বোনারকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরান তাইজুল ইসলাম। এবার ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত হানলেন নাঈম হাসান। ডানহাতি এই অফ স্পিনার ফিরিয়েছেন জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে। ১০৭ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩০৭ রান। কাইল মেয়ার্স ১৩৭ ও জশুয়া ডা সিলভা ৫ রানে ব্যাটিং করছেন।
স্বস্তি ফেরালেন তাইজুল
চুতর্থ দিনের শেষভাগে ব্যাটিং শুরু করেন কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বোনার। পঞ্চম দিনে ক্যারিবীয় এই দুই ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। অবশেষে স্বস্তি ফেরালেন তাইজুল ইসলাম।
বোনারকে ফিরিয়ে ২১৬ রানের জুটি ভেঙেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ফেরার আগে ৮৬ রান করেন অভিষিক্ত এই ক্রিকেটার। মেয়ারাস ১২১ ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড ৬ রানে ব্যাটিং করছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৮৩ রান। জিততে ২৯.২ ওভারে ১১২ রান দরকার সফরকারীদের, বাংলাদেশের দরকার ৬ উইকেট।
৩৩ ওভারে ক্যারিবীয়দের দরকার ১২৯ রান
পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত শাসন জারি রেখেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটার কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বোনার। চতুর্থ উইকেটে রেকর্ড ২০৭ রানের অবিচ্ছন্ন জুটি গড়েছেন তারা। তাদের জুটিতে ৯৭ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৬৬ রান। ৩৯৫ রান পাড়ি দিতে ৩৩ ওভারে ক্যারিবীয়দের দরকার আর ১২৯ রান। মেয়ার্স ১১৭ ও বোনার ৭৯ রানে অপরাজিত আছেন।
রেকর্ডময় সেঞ্চুরিতে ভয় জাগাচ্ছেন মেয়ার্স
উপমহাদেশের মাটিতে রান করতে সব সময়ই ভুগতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের। স্পিনের বিপক্ষে কখনও কখনও নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে যায় তাদের। অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে কাইল মেয়ার্স অবশ্য এসবের কিছুই তোয়াক্কা করলেন না। দলের দুঃসময়ে আলোক বর্তিকা হাতে ছুটে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে উপমহাদেশে অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মেয়ার্স। ক্যারিবীয়দের ১৪তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ১৭৯ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ১০০ ছোঁন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরআগে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আরেক অভিষিক্ত এনক্রুমাহ বোনার। মেয়ার্স-বোনারের জুটি ১৬০ রান ছাড়িয়েছে। যা চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো দলের জন্য সর্বোচ্চ। মেয়ার্স ১০৬ ও বোনার ৬০ রানে ব্যাটিং করছেন। এই জুটিতে বাংলাদেশকে চোখই রাঙাচ্ছে ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ক্যারিবীয়দের শাসনের সেশন
চুতর্থ দিনে দ্রুতই ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নাটাই হাতে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন শেষে নাটাই আর বাংলাদেশের হাতে নেই। ৩১ ওভারের এই সেশনে ব্যাট হাতে শাসনই করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বোনার। বাংলাদেশের করা ভুলগেুলো কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
পঞ্চম দিনের প্রথম শেষনে ৩১ ওভারে ৮৭ রান যোগ করেছেন মেয়ার্স-বোনার। চতুর্থ দিন থেকে ব্যাটিং করে আসা এই দুই ব্যাটসম্যান গড়েছেন ১৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। মধ্যাহ্নভোজের আগে ৭১ ওভার শেষে ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৯৭ রান। মেয়ার্স ৯১ ও বোনার ৪৩ রানে অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশের ভুলে বাড়ছে অপেক্ষা
চতুর্থ দিনের শেষভাগ থেকে দলের হাল ধরেছেন কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বোনার। বাজে শুরুর পর দলকে পথ দেখিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছেন এই দুজন, ব্যাটিং করেছেন ১৫.৪ ওভার। পঞ্চম দিনও প্রতিরোধের দেয়াল তুলে উইকেটে টিকে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দুই ব্যাটসম্যান।
যদিও উইকেট তুলে নেওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ভুলে সেটা হয়নি। তাইজুল ইসলামের একটি ডেলিভারি খেলতে পরাস্ত হন মেয়ার্স। বল গিয়ে আঘাত হানে মেয়ার্সের প্যাডে। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি, বাংলাদেশও রিভিউ নেয়নি। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, লাইনে থাকা ডেলিভারিটি লেগ স্টাম্পে আঘাত করছে।
এরপর আরও একটি সুযোগ আসে। মেহেদী হাসান মিরাজের করা ৫৩ ওভারের প্রথম বলে স্লিপে ক্যাচ দেন দেন মেয়ার্স। ক্যাচটি নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর ভুলে জীবন পাওয়া মেয়ার্স এই বল থেকেই ১ রান নিয়ে পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫৮তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টেই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মেয়ার্স।
মেয়ার্সকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন বোনার। ২৬ রানে ব্যাটিং করছেন তিনি, মেয়ার্স টিকে আছেন ৬০ রানে। ইতোমধ্যে ৯০ রানের জুটি হয়ে গেছে তাদের। পঞ্চম দিনে এখন পর্যন্ত ১৮ ওভার ব্যাটিং করেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। মেয়ার্স-বোনারের প্রতিরোধেই অপেক্ষা বেড়ে যাচ্ছে ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার মিশনে মাঠে নামা বাংলাদেশের, সঙ্গে আছে নিজেদের ভুলও।