অবশেষে অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন শতবর্ষী রাবেয়া
১৮ বছর পর অবশেষে অস্ত্র মামলা থেকে রেহাই পেলেন রাবেয়া খাতুন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে অস্ত্র মামলা থেকে খালাস দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশীদ।
আদালত বলেছেন, ‘এই মামলায় রাবেয়া খাতুনকে আর আদালতে আসতে হবে না। একইসঙ্গে এই মামলা সংশ্লিষ্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আল মামুন ও এপিপিকে সর্তক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।’ সবাই মিলে বিচার বিভাগকে রা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।
অবৈধ অস্ত্র ও গুলিসহ তেজগাঁও থানার গার্ডেন রোডের একটি বাসা থেকে রাবেয়া খাতুনকে ২০০২ সালের ২ জুন গ্রেফতার করে পুলিশ। সেদিনই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় জুলহাস ও অপর এক ব্যক্তি মাসুদকে আসামি করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়। এর প্রায় ছয়মাস পর তিনি জামিনে মুক্তি পান।
একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর রাবেয়া খাতুন ও জুলহাসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তবে ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলার বিচার দীর্ঘ ১৬ বছরেও সম্পন্ন না হওয়ায় এ নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘অশীতিপর রাবেয়া: আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম নোবেল।
আদালত ২৯ এপ্রিল রুল জারি করেন এবং মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
২০ আগস্ট এ মামলায় ক্ষমা চেয়েছিলেন ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি)। শুনানিতে পুলিশ সুপার তার লিখিত বক্তব্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার পাশাপাশি আদালতকে বলেছিলেন, ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না। পরে আদালত ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করেন।
ওই আবেদনের পর এই রিট আবেদনের ওপর শুনানির সময় আসামি জুলহাস মিয়া বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন সেই বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। এরপর ভোলার পুলিশ সুপার, ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারকসহ সংশ্লিষ্টদের তলব করেন।
পরে ১৫ অক্টোবর শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
অবশেষে অস্ত্র মামলা থেকে রেহাই পেলেন তিনি, আর আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না তাকে।