ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিচ্ছেন নাফিস-রাজ্জাক
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক করা হয়েছে আব্দুর রাজ্জাককে। শাহরিয়ার নাফিসও পেতে যাচ্ছেন বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ পদ। কিন্তু দুজনের কেউ-ই খেলা ছাড়েননি। নতুন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে আর খেলা হবে না, সেটা বুঝতে পেরেছেন অভিজ্ঞ এই দুই ক্রিকেটার। যে কারণে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্জাক ও নাফিস।
১৩ ফেব্রুয়ারি বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের সামনে অবসরের ঘোষণা দেবেন তারা। অবসরের ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিসিবিকে জানিয়েছেন রাজ্জাক-নাফিস। বাংলাদেশ দলে দীর্ঘদিন ধরে খেলা এই দুই ক্রিকেটারের বিদায় উপলক্ষ্যে শনিবার অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে ক্রিকেটারদের অধিকার আদায়ের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।
বাংলাদেশের হয়ে ১৩টি টেস্ট, ১৫৩ ওয়ানডে ও ৩৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রাজ্জাক। ওয়ানডেতে বাঁহাতি এই স্পিনারের শিকার ২০৭ উইকেট। যা বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। দেশের প্রথম স্পিনার হিসেবে ২০০'র বেশি ওয়ানডে উইকেটের মালিক হন রাজ্জাক। টি-টোয়েন্টিতেও তৃতীয় ও স্পিনারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক তিনি। এই ফরম্যাটে তার শিকার ৪৪ উইকেট।
ঘরোয়া ক্রিকেটে রাজ্জাকের বোলিং রীতিমতো বিস্ময় জাগানিয়া। বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ৬০০'র বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১২৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই স্পিনারের শিকার ৬৩৪ উইকেট। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটেও রাজ্জাকের বোলিং রেকর্ড ঝলমলে। ২৮০টি ম্যাচে নিয়েছেন ৪১২ উইকেট। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। সর্বোচ্চ ৪২১ উইকেটের মালিক ওয়ানডের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা শাহরিয়ার নাফিস বাংলাদেশের হয়ে ২৪ টেস্ট, ৭৫ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তার খেলা একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ছিল এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। নাফিসের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৪৩ রানে হারায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে ২০১১ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে খেললেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় নাফিস এখনও সাত নম্বরে। ওয়ানডেতে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪টি সেঞ্চুরি ও ১৩টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩১.৪৪ গড়ে ২ হাজার ২০১ রান করেছেন। সেঞ্চুরির তালিকায় তার অবস্থান চার নম্বরে। ২৪ টেস্টে একটি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৬.৩৯ গড়ে ১ হাজার ২৬৭ রান করেছেন নাফিস। একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে ২৫ রান করেছিলেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে নাফিস সব সময়ই পারফর্ম করেছেন। ১২৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৫টি সেঞ্চুরি ও ৪৮টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৮.৪০ গড়ে ৮ হাজার ১৪১ রান করেছেন তিনি। ১৮০টি লিস্ট 'এ' ম্যাচে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৩০টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩২.৩২ গড়ে ৫ হাজার ২৬৯ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।