মিয়ানমারে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই চলছে তুমুল প্রতিবাদ-সমাবেশ। কিন্তু, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন ছিল আজ রোববার, এদিন সামরিক শাসন বিরোধী বিক্ষোভে তাজা গুলি চালিয়েছে মিয়ানমার পুলিশ। ফলে সারাদিনে কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছে, বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চি'র নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী এনএলডি'র বিরুদ্ধে গেল বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনে। নির্বাচনে সু চি'র দলের নিরঙ্কুশ জয়কেও তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।
৫০ বছরের সামরিক শাসনের পর গণতন্ত্রের দিকে মিয়ানমারের ধীর গতির উত্তরণকে পুরোপুরি থামিয়ে দেয় এ অভ্যুত্থান। তাই এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে হাজার হাজার জনতা। পশ্চিমা দেশগুলোও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জান্তার ক্ষমতা দখলের তীব্র নিন্দা করেছে।
চলমান অবস্থা সম্পর্কে দেশটির ফার্স্ট ক্যাথলিক কার্ডিনাল মাওং বো তার টুইটার পোস্টে লিখেছেন, 'মিয়ানমার এখন যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র।'
সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনের নানা এলাকায় বিক্ষোভ দমনে ব্যাপক শক্তি-প্রয়োগ করেছে পুলিশ। এসময় তারা স্টান গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট এমনকি আকাশমুখে তাজা গুলিও ছোঁড়ে। পুলিশের শক্তি বাড়াতে সেনা সদস্যরাও যোগ দেয়।
এসব হামলার মুখে আহত হন অনেক মানুষ, বিক্ষোভকারীরা তাদের সঙ্গে সঙ্গেই সরিয়ে নেন। পেছনে পড়ে থাকে রক্তরঞ্জিত রাজপথ। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এমন একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি সেখানে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কর্তৃপক্ষের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইয়াঙ্গুনে শিক্ষকদের একটি সমাবেশে পুলিশ স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে, তাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এক নারী। তার কন্যা ও এক সহকর্মী মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এছাড়া, দাওয়েই এলাকায় পুলিশ সরাসরি গুলি চালালে তিনজন নিহত হয়, আহত হয় আরও কয়েক জন। এনএলডি রাজনীতিবিদ কোয়ে মিন হিতেক রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
পাশাপাশি মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যম দ্বিতীয় বড় শহর মান্দালয়ে আরও দুজনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ করে।
হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদ ও পুলিশের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। কিন্তু, তারা ফোনকল গ্রহণ করেননি।
- সূত্র: রয়টার্স