ভারতের সেরা ধনী দম্পতি মুকেশ ও নীতা আম্বানি যেসব খাতে উদারহস্তে খরচ করেন
বিশ্বসেরা ১০ ধনীর তালিকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার স্থান দখল করেছেন ভারতের সবচেয়ে মূল্যায়িত বাণিজ্যিক সংস্থা- রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। গত ১৪ মার্চ নাগাদ ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে তার মোট সম্পদ ছিল ৮১.৯ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে তিনি আবারও ১০ম স্থান অধিকার করেন বৈশ্বিক তালিকায়, একইসঙ্গে ধরে রেখেছেন নিজ দেশে সেরা ধনীর আসন।
এতটুকু শুনেই বোঝা যায় জৌলুসে জীবন কাটাতে বা বিলাসপণ্য ক্রয়ের জন্য মুকেশ আম্বানির অর্থের ঘাটতি নেই। জীবনযাপনের শৌখিন নানা আয়োজনে তার পরিবার খরচ করার জন্যেও বিখ্যাত। পাঁচ শতাধিক কর্মী কাজ করে এই পরিবারের বাসভবন রক্ষণাবেক্ষণে, আছে উড়ন্ত অফিস কাম হোটেলের মতো আয়োজন। আম্বানিদের মতো ধনী হলেই কেবল যেসব বিলাসীতা করা যায়, এমন পাঁচটি জিনিস তুলে ধরতেই এই আয়োজন।
আম্বানি পরিবারের বাসভবন- বিখ্যাত 'অ্যান্টিলিয়া':
২৭ তলা এই সুউচ্চ দালানের মূল বাসিন্দা শুধু আম্বানি পরিবার, বাকিরা কর্মচারী। একে বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ি বলেও মনে করেন অনেকে। ভারতীয় দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের মতে, নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ, সুবিশাল গ্যারাজ এবং নাচের বলরুমের মতো সাধারণ আয়োজন তো আছেই, তার সঙ্গে আছে একটি বিশেষ স্নোরুম- যেখানে কৃত্রিমভাবে উৎপন্ন হিমশীতল তুষারকণা স্পর্শের আনন্দ নিতে পারেন মুকেশ আম্বানির পরিবারের সদস্যরা।
বিলাসবহুল গাড়ির সম্ভার:
অ্যান্টিলিয়ার পুরো একটি তলা বরাদ্দ বরাদ্দ শুধু আম্বানি পরিবারের কারগুলো রাখার জন্য। জিকিউ ইন্ডিয়া সূত্রমতে, সেখানে রাখা মোট কারের সংখ্যা ১৬৮টি। স্ট্রিমিং সার্ভিস নেটফ্লিক্সের অনুষ্ঠান- ক্রিকেট ফিভারে অংশ নেওয়া মুম্বাই ইন্ডিয়ান টি-টুয়েন্টি দলের কয়েকজন সদস্যকে অ্যান্টিলিয়ায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়। তাদের কল্যাণেই অনুষ্ঠানের একটি পর্বে পরিবারটির মালিকানাধীন -বেন্টলি বেন্তায়গা, বেন্টলি মুলসান্নে, রোলস রয়েস ফ্যান্টম এবং পোরশে সায়ান- এর মতো অনেক দামি গাড়ি দেখার সুযোগ পান দর্শকেরা।
৬০০ কর্মচারী?
২৭ তলা বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের ঝক্কিও কম নয়। মুকেশ আম্বানি ও তার পরিবারের সদস্যরা অধিকাংশ সময় পারিবারিক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য সামলাতে ব্যস্ত থাকেন। তাই বাসভবনটির তদারকি ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন ৬০০ জনের সুবিশাল কর্মী বাহিনী। এদের মধ্যে শেফ, বেয়ারা, বাটলার থেকে শুরু করে শরীরচর্চা প্রশিক্ষক এবং নিরাপত্তা কর্মীরাও আছেন। মুকেশের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীদের মতো জরুরি কিছু কর্মীকে কর্মস্থলেই থাকার সুযোগ দেওয়া হয়।
দেশের শীর্ষ ধনী হওয়ায় সরকারিভাবেও নিরাপত্তা পান মুকেশ। তিনি জেড প্লাস সিক্যিউরিটি স্ট্যাটাসের অধিকারী। এই নিরাপত্তা দেয় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের কিছু সদস্য। তাদের জন্যেও আবাসন সুবিধা দেয় আম্বানি পরিবার।
আকাশপথে অফিস:
ব্যাংকে যার শত শত কোটি ডলার, তার কাছে প্রাইভেট জেট থাকাই স্বাভাবিক। মুম্বাই মিরর এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী নীতাকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে বোয়িং কোম্পানির বিজনেস জেট উপহার দেন মুকেশ। এই দম্পতির তিন সন্তান- আকাশ, ইশা এবং অনন্ত। তাদের কর্মঠ হিসেবে গড়ে তুলেছেন নীতা। ভারতে বিভিন্ন দাতব্য কাজেও নীতা উদারহস্তে দান করেন। তবে দানধ্যান করলেও নীতা ভালোবাসেন আরম্ভরপূর্ণ জীবনযাপন। জিকিউ ইন্ডিয়া সূত্র জানায়, নীতার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজটি এত বড় যে, অনায়সে একে উড়ন্ত হোটেল স্যুইট বলা যায়। বিমানটিতে আছে ১,০০০ বর্গফুটের অফিস, ব্যক্তিগত শয়নকক্ষ থেকে শুরু করে সুসজ্জিত একটি অভিজাত স্নানঘর।
দামি ঘড়ির প্রতি ভালোবাসা:
অতিদামী পোশাক, হ্যান্ডব্যাগ আর ভিনটেজ টি সেট কেনার জন্য খ্যাতি আছে নীতা আম্বানির। তার আরেকটি শখ বহুমুল্য ঘড়ি সংগ্রহের। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে কার্টিয়ার, বুলগারি এবং গুচির মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের ঘড়ি পরে উপস্থিত হতে দেখা গেছে।