গ্যাস লাইনের ছিদ্র থেকে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা: নগর পরিকল্পনাবিদ
গ্যাস লাইনের ছিদ্র অথবা রান্নাঘরের গ্যাস রাইজার থেকে চট্টগ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চট্টগ্রাম নগর পরিকল্পনাবিদেরা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা এলাকায় একটি ভবনে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরও ২১ জন। তবে কি কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। তবে গ্যাস লাইনের লিকেজ অথবা রান্নাঘরের গ্যাস রাইজার থেকে এই বিস্ফোরণের সম্ভাবনার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিস্ফোরণের ঘটনার পর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-এর প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহিনুল ইসলামসহ একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, “দুর্ঘটনা কবলিত ভবনটি সিডিএর বিধি অনুযায়ী হয়নি। সড়কের জায়গা দখল করে তৈরি করা হয়েছে সেপটিক ট্যাংক। তার পাশে রান্নাঘর এবং গ্যাসের রাইজার রাখা ছিল। ফলে সেপটি ট্যাংকের জমে থাকা গ্যাস ও গ্যাস লাইনের লিকেজ একসাথে হয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সিডিএ, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ সমন্বয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেটকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে গঠিত এ কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে নিহত ৭ জনের দাফন কাফনের জন্য প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ দেওয়া হবে এবং জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে আহতদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব নিয়েছেন।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদার বলেন, আমাদের গ্যাস লাইনে কোন সমস্যা নেই। তারপরও কি কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারি পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গ্যাস লাইন পুরোনো ছিল। এই দুর্ঘটনায় গ্যাস লাইনের লিকেজ, রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া কিংবা নাশকতামূলক কোন কর্মকান্ডের উপস্থিতি আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
বিস্ফোরণে ২টি আবাসিক ভবনের প্রাচীর ও সড়কের সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের দোতলা পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছি আমরা।
এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসীন বলেন, বিস্ফোরণে বাড়িটির একাংশ বিধ্বস্ত হয়েছে ও দেয়াল ধসে গেছে। কি কারণে এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে তা বলা যাচ্ছে না। আমরা তদন্ত করে দেখছি কী কারণে এ ঘটনা ঘটছে।
বিস্ফোরণের ঘটনার দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে চসিক। এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাড়িটির দুই তলার সব বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।কাজ করছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীরাও।