অক্সফোর্ড টিকার বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাগ্রহণকারী কিছু ব্যক্তির দেহে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে, জার্মানির গ্রেইফসওয়াল্ড ইউনিভার্সিটি ও নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অসলো'র দুটি গবেষক দল।
গবেষকদের দাবি, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রতিষেধক শরীরে সার্স কোভ-২ জীবাণু বিরোধী অ্যান্টিবডি উৎপাদনে সাহায্য করার মাধ্যমে ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু, অনেক সময় অ্যান্টিবডি রক্তের শ্বেতকণিকাকে জীবাণু বা ক্ষতিকর আক্রমণকারী হিসেবে শনাক্ত করে ভুলবশত এর উপর হামলা করে বসে। এই হামলা মোকাবিলা করতে গিয়েই শরীর অতিমাত্রায় শ্বেতকণিকা তৈরি করতে থাকে, যার কারণে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ে।
গবেষক দল দুটি জার্মানি ও নরওয়েতে স্বতন্ত্রভাবে তাদের গবেষণা চালায়। উভয় দলই বলছে, খুবই বিরল ধরনের কিছু ঘটনায় শ্বেতকণিকার উপর হওয়া এধরনের হামলার ফলে মস্তিস্কে প্রাণঘাতি রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটতে পারে।
বিজ্ঞানীরা আরও জানান, যেসব ব্যক্তি এভাবে মস্তিস্কে রক্ত জমাটের শিকার হন; তারা টিকাটি গ্রহণ এর পর তীব্র মাথাব্যথা, ঝিমুনি ভাব, এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন। তবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই ঝুঁকি শনাক্ত করে- যত দ্রুত সম্ভব তাদের দেহে রক্ত পাতলাকারী ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমেই এটি মোকাবিলা করা সম্ভব বলেও তারা উল্লেখ করেন।
জার্মান দলটি যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তাদের অনুসন্ধানের কাজ করেছেন। তারা বলেছেন, এ ফলাফলের কারণে সাধারণ মানুষের টিকা নিতে ভয় পাওয়া উচিৎ নয়, তবে নরওয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে। আরও বিস্তারিত পরীক্ষার পরই তারা সেটি প্রত্যাহারের কথা পুনর্বিবেচনা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
জার্মান ও নরওয়ের বিজ্ঞানীদের গবেষণাটি এখনও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পর্যালোচনার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ স্বীকৃতি পায়নি।
তবে গ্রেইফসওয়াল্ড ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের অধ্যাপক আন্দ্রেঁ গ্রেইনাশের জানিয়েছেন, তার দলটি গবেষণার ফলাফলে স্বনামধন্য ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল- ল্যানসেটে প্রকাশনার জন্য জমা দেবেন।
- সূত্র: ডেইলি মেইল