ওশান ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল: সমুদ্র পাড়ের নাচের উৎসব শেষ হলো আজ
পর্দা নামলো প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব 'ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যাল-২০১৯' এর।
এ উৎসব উপলক্ষে প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে মঞ্চস্থ হলো আলীবাবা চল্লিশ চোরের কাহিনী নিয়ে নৃত্যনাট্য বাদী-বান্দার রূপকথা।
ওয়ার্ল্ড ড্যান্স অ্যালায়েন্স, এশিয়া প্যাসিফিক (ডব্লিউডিএ, এপি)-এর বাংলাদেশ শাখা নৃত্যযোগ এই নৃত্যোৎসবের আয়োজন করে।
উৎসবের শেষ দিন সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিনব্যাপী বেশ কয়েকটি সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশের গবেষকেরা।
বক্তব্য উপস্থাপনের এক অধিবেশনে ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের প্রধান কিউরেটর লুবনা মারিয়াম বলেন, সবাইকে মঞ্চে নাচ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। এটি আমি বুঝেছি অনেক বছর পর।
তরুণদের তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, এখনই ঠিক করে নাও তোমরা কী করবে, নাচ না গবেষণা, নাকি নৃত্য সংশ্লিষ্ট অন্য কিছু।
সম্পূর্ণতা শিরোনামে এক ধারণাপত্রে সোহিনী চক্রবর্তী কথা বলেন, ড্যান্স থেরাপি নিয়ে। সাবিহা ভাসেল কথা বলেন বয়স্ক মানুষদের নিঃসঙ্গতা দূর করতে ডান্স থেরাপির কার্যকারিতা নিয়ে। পেঁচাকুচা নামের এক অধিবেশনে দুজন তরুণ নৃত্যশিল্পী ভাগাভাগি করেন তাদের নৃত্যে আসা ও টিকে থাকার অভিজ্ঞতা। নাচ শিখতে আসা বেশিরভাগ শিশু কীভাবে ঝরে পড়ে, বঞ্চিত হয় নৃত্যের মূল আনন্দ থেকে, এসব নিয়েও আলোচনা হয় সেখানে। মঞ্জুলিকা তারা এক কর্মশালায় নাচ নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি সংক্রান্ত নানা ধারণা ও প্রস্তাব তুলে ধরেন।
গত সন্ধ্যায় কক্স-কার্নিভাল মিলনায়তনে তাইওয়ানের সুট-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিয়া ইয়ু সু পরিবেশন করেন 'ব্লোসম', হংকংয়ের ওয়েই মিং প্যাকের 'টয়লেট পাম্প', ভারতের সুমেধা ভট্টাচার্য্যর 'সি দ্য সাউন্ড', যুক্তরাষ্ট্রের মেগান থমসনের থ্রেসহোল্ডস ক্রসড রিকনসিডারেশন, বাংলাদেশের শাম্মি আখতারের 'মাইন', সাধনা ও নাইম খান ডান্স কোম্পানির 'আলট্যাভায়োলেট', ইয়াসিন আরাফাতের 'ডেমোক্রেসি', ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পী অনীল কুমার সিং ও মোফাস্সাল আলিফের 'আই অ্যান্ড মাইসেল্ফ' নৃত্য পরিবেশিত হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচিত এ পরিবেশনাগুলোর পর ছিল সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের নৃত্যনাট্য বাদী-বান্দার রূপকথা। সন্ধ্যায় শুরুতেই ছিল 'স্কাই ড্যান্স' নামের একটি ডান্স চলচ্চিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, কক্সবাজারে এ ধরনের অনুষ্ঠানকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই। আগামী দিনেও আমরা এ ধরনের উৎসবের সঙ্গে থাকতে চাই।
এ ছাড়াও অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
গত ২২ নভেম্বর কক্সবাজারে শুরু হয় এ উৎসব। এ চার দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মারমেইড ইকো রিসোর্টে সেমিনার, প্রবন্ধ পাঠ, ধারণাপত্র উপস্থাপন, কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের দুই শতাধিক শিল্পী, শিক্ষক, গবেষক ও কোরিওগ্রাফার। এ ছাড়া এ বছর ডব্লিউডিএ, এপির বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। আগামী বছর এ সভা অনুষ্ঠিত হবে হংকং বা চীনে। বিশ্বব্যাপী নৃত্যশিল্পীদের এ সংস্থার সহসভাপতি লুবনা মারিয়াম জানান, বাংলাদেশে নৃত্যচর্চা, গবেষণা, সমর্থন দিতে কাজ করবে সংস্থাটি।