দেশের ৪৫টি জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির উদ্বেগজনক গতি
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার বাইরের জেলাগুলো নিরাপদ থাকলেও এখন সেগুলোই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের ৪৫টি জেলা এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ অবস্থায় কঠোর লকডাউন দিয়ে অধিক সংক্রমিত জেলাগুলোতে বেশি বেশি অ্যান্টিজেন টেস্ট করা ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তা না'হলে সারাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সোমবার খুলনা বিভাগের বাগেরহাটে করোনাভাইরাসের পজিটিভিটি রেট ছিলো ৫৫.১৭%। এছাড়া পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইলে পজিটিভিটি রেট ছিলো ৫১% বেশি। এরমধ্যে কুড়িগ্রামে পজিটিভিটি রেট ১০০%, সেখানে দুইটি নমুনা পরীক্ষায় দুটিই পজেটিভ আসে। যশোর, মেহেরপুর, নাটোর ও লালমনিরহাটের পজিটিভিটি রেট ৩১-৩৬% এরমধ্যে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ১০ শতাংশের বেশি পজিটিভিটি রেট থাকা জেলাগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জোন হিসেবে বিবেচনা করছে। এছাড়া, ৫-৯ শতাংশ পজিটিভিটি রেট থাকা জেলাগুলোকে মাঝারি এবং পাঁচ শতাংশের হলে নিম্ন ঝুকির বলে ধরা হচ্ছে।
এ হিসাবে, দেশের ৪৫টি জেলার করোনাভাইরাসের পজিটিভিটি রেট শতাংশের এর বেশি।
বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সংক্রমণ ঢাকা বিভাগে ও সবচেয়ে বেশি খুলনা ও রংপুর বিভাগে। ঢাকা বিভাগে পজিটিভিটি রেট ৫.০২%, সেখানে খুলনায় ৩০.৩৩% ও রংপুরে ২১.৩২%।
এব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুসরাত সুলতানা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছেন, ঢাকায় সংক্রমণ কমায় মানুষের মধ্যে মিছেমিছি নিরাপত্তার অনুভতি কাজ করেছে, এখন অনেকেই মাস্ক পরছেন না। কিন্তু, ঢাকার বাইরে যে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে শিগগিরই ঢাকাসহ সারাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। খুলনা, নোয়াখালি, সিলেটে সংক্রমণ বাড়ছে-এই জেলাগুলো কিন্তু ঢাকা থেকে দূরে নয়। এখনই ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে কঠোর লকডাউন দিয়ে, মানুষের মুভমেন্ট বন্ধ করতে হবে, এখন কয়েকটি জেলায় লকডাউন সত্ত্বেও মুভমেন্ট কিন্তু চলছে। এই অবস্থায় লকডাউন না হলে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সারাদেশে ছড়িয়ে পরবে, ওই ভেরিয়েন্ট অনেক বেশি সংক্রামক।
ডা. নুসরাত সুলতানা বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে অনেক বেশি অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে। প্রতিদিন যে ১৭-১৮ হাজার টেস্ট হয় তা দিয়ে সঠিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়না। অ্যান্টিজেন টেস্ট করে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেটেড করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বৈধ পথে যত মানুষ আসেন ,তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যাতায়াত হয় অবৈধ পথে। তাই এক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।