পুলিশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে: পরীমনি
রাজধানীর সাভার থানায় দুই ব্যবসায়ীসহ চার জনের বিরুদ্ধে তাকে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি। এই মামলার বিষয়ে মঙ্গলবার (১৫ জুন) তার সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে আসেন পরীমনি। সেখানে দুই ঘণ্টা অবস্থান করে তিনি বাড়ি ফিরে গেছেন।
মামলার প্রাসঙ্গিক আলোচনা শেষে ডিবি অফিসের প্রাঙ্গণে অপেক্ষমাণ গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনি। তিনি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং তদন্তের দ্রুত গতি নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
"পুলিশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। আমি ডিবি (অফিসে) নিজেই এসেছি। আমাকে তারা সাহস দিয়েছেন। আমি আবারও কাজে ফিরবো। আমি আসলে স্বস্তি নিয়ে বাঁচতে চাই।"
তিনি বলেন, "আমার সঙ্গে যা হয়েছে, আমি আশাবাদী, আমি এর ন্যায়বিচার পাবো। পুলিশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। আসামিদের গ্রেফতার করেছে। আমি সেদিন বলেছিলাম যে, আমাকে একটু আইজিপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিন। উনি আমার কথা শুনলে নিশ্চয়ই আমি ন্যায়বিচার পাবো। এজন্য আমি শিল্পী সমিতি, পরিচালক-প্রযোজক সমিতির নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তারা আমাকে সহযোগিতা করেননি। কিন্তু আইজিপি বিষয়টি জানতে পেরে ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।"
এর আগে, রোববার রাতে পরীমনি এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে নাসির উদ্দিন তাকে নির্যাতন করেন এবং হত্যার হুমকি দেন।
এদিকে সোমবার উত্তরার নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে প্রধান আসামী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ দাবি করেন, সদস্য না হয়েও ঢাকা বোট ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন পরীমনি ও তার সঙ্গীরা। এমনকি তারা তখন মাতাল ছিলেন এবং কয়েকটি মদের বোতল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে বাধা দিলে পরীমনি উল্টো তাকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেছেন।
তবে পরীমনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে 'আদৌ তেমনটি করা সম্ভব কিনা' সে প্রশ্ন রাখেন। আলোচিত এ অভিনেত্রী বলেছেন, ব্যবসায়ী নাসির, তুহিন সিদ্দিক অমি এবং ক্লাবের আরও কয়েকজন তাকে জোর করে মদপানে বাধ্য করেন। ইতঃপূর্বে, পরীমনি এ ঘটনার পর পুলিশের নিস্ত্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ করলেও মঙ্গলবার তিনি পুলিশের তৎপরতায় তার সন্তুষ্টির কথাই জানালেন।
সাংবাদিকদের দেওয়া ব্রিফিংয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ বলেন, তারা মামলাটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করছেন, তবে আরো চারজন নামহীন অভিযুক্তকে এখনও শনাক্ত করতে পারেননি।
"আমরা ম্যাজিকের মতোই তৎপরতা দেখিয়ে মামলা দায়েরের আগেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলা ও আসামীকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করার ঘটনা ছিল যাদুর মতোই চমকপ্রদ," তিনি যোগ করেন।
এর আগে গোয়েন্দা শাখার গুলশান বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মশিউর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছিলেন, "একটি মামলার বাদীর থেকে মূল ঘটনার জবানবন্দী নেওয়া নিয়মিত তদন্ত প্রক্রিয়ারই অংশ। অনেক সময় মামলার এফআইআরে কিছু বিবরণ বাদ পড়ে যায়, তাই এসব কেসে আমরা ভিকটিমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলি। পরীমনির সঙ্গে কথা বলেই সে রাতে আসলে কী ঘটেছিল- সেব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।"
রোববার রাতে পরীমনি অভিযোগ করেছিলেন, তিনি বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত মেকআপ আর্টিস্ট জিমিকে নিয়ে উত্তরা বোট ক্লাবে যান। সেখানে অমি তাকে কিছু লোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, যারা ওই সময় মাতাল ছিলেন। এক পর্যায়ে তাদেরই একজন পরিমনীকে জোর করে মদ পানে বাধ্য করে এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরপর তিনি সোমবার সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার মামলাটি দায়ের করেন।