স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি দান করলেন তোফায়েল আহমেদ
মাতৃভক্তি ও ভালোবাসা থেকেই মায়ের নামে ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করে সমাজসেবার কাজ শুরু করেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। নিজ এলাকা ভোলা সদরের বাংলা বাজারে কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
সেই অনুপ্রেরণা থেকে পরবর্তীতে নিজের নামে গড়ে তুলেছেন তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশন। গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ভোলা সদর উপজেলা চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই ফাউন্ডেশনে নিজের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দান করার ঘোষণা দেন তিনি।
ভোলা ভোলা সদর উপজেলায় ফাউন্ডেশনের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৬ সালে শুরু হলেও, অনানুষ্ঠানিকভাবে ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স নামে সমাজসেবার কাজ শুরু হয় ১৫ বছর আগে থেকেই। এখন ফাউন্ডেশনটির আওতায় আরও অনেক সংগঠন রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য সাহায্যের এক আলোকবর্তীকা হয়ে উঠেছে এ ফাউন্ডেশন।
ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স নির্মাণের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। কমপ্লেক্সটির অধীনে এলাকায় শিক্ষা-সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে দিতে তোফায়েল নির্মাণ করেন স্বাধীনতা যাদুঘর নামের একটি মিউজিয়াম, ফাতেমা খানম স্কুল কলেজ এবং ফাতেমা খানম মাদ্রাসা।
মায়ের স্মৃতি ধরে রাখতে মায়ের নামে ফাতেমা খানম বৃদ্ধাশ্রমও প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এ রাজনৈতিক সহচর। এখানে বয়োবৃদ্ধ নারীরা জীবনের শেষ দিনগুলো শান্তি ও নিরুদ্রপে কাটাতে পারছেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, "বৃদ্ধাশ্রমের নারীদের পাশে গিয়ে যখন বসি, তখন যেন মনে হয় আমার মায়ের পাশেই বসে আছি।"
এছাড়াও, এলাকার মানুষের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার ফাউন্ডেশন একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজও শুরু করেছে বলে জানান তিনি। মেডিকেল কলেজটি তার পিতামাতার নামেই নামকরণ করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শত শত মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
এব্যাপারে আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, "পৃথিবী ছেড়ে একদিন আমাকেও চলে যেতে হবে, সেদিন কিছুই সঙ্গে নিতে পারব না। কবরে সবাই খালি হাতেই যায়। মৃত্যুর পর ঢাকায় থাকা আমার সম্পদ নিষ্ফল হয়ে পড়বে।"
ঢাকায় ও ভোলায় থাকা তার সম্পদের পরিমাণ খুব সামান্য বলেও জানান তিনি।
"ওই সম্পদ দিয়ে আমি কী করব, আমার মেয়ে একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। মেয়ে জামাই নিজেও দেশের একজন নামকরা কার্ডিওলজিস্ট। তাই আমার কোনো সম্পত্তির দরকার নেই। বরং অসহায় মানুষের কল্যাণেই এসব সম্পত্তি বেশি কাজে দেবে," বলেছেন সাবেক এই মন্ত্রী।
ফাতেমা খানম কমপ্লেক্সের মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে সুদৃশ্য এক মসজিদ। মসজিদের স্থাপত্য কৌশল যেন সমগ্র কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য অনেকগুণে বাড়িয়েছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে কিছু বন্ধু-স্বজনের অনুদান নিয়ে আমি মসজিদটি তৈরি করেছি।