ভেনিজুয়েলার গল্প শুনিয়ে তোফায়েল আহমেদ যে সতর্কবার্তা দিলেন
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য শুধুমাত্র পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরশীল না হয়ে পণ্যে বৈচিত্র্যকরণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করার সময় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভেনিজুয়েলার পতনের গল্প শোনালেন।
শুধুমাত্র তেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে গিয়ে একটি দেশ কীভাবে দুর্ভিক্ষের দিকে এগুচ্ছে, গতকাল দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের এ বর্ষীয়ান নেতা।
তিনি বলেন, “কয়েক বছর আগে ২০১২ সালে ভেনিজুয়েলার মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৬৩ ভাগ। আর দারিদ্র ছিল মাত্র ২০ ভাগ। সাত বছর পর দেশটির অবস্থা এখন করুণ।”
কেবল একটি সেক্টর থেকেই তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হত। সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ ছিল ভেনিজুয়েলা।
কীভাবে দেশটি এমন অবস্থায় পৌঁছুল সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আরব বসন্তের পর যখন তেলের দাম কমে যায় তখন ভেনিজুয়েলা অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে। এরপর সে দেশে নানা সমস্যা হতে থাকে।”
“তখন থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মুল্যস্ফীতি ৮০ হাজার ভাগ বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এক লাখ ভাগে চলে যাবে।”
এক সময় মাত্র একটি খাত থেকে দেশটির ৮৪ ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হতো। কিন্তু এই একটি পণ্যের উপর নির্ভরতা ওই দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন তোফায়েল আহমেদ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের রপ্তানিও একটি পণ্যনির্ভর। এদেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ৮৪ ভাগ গার্মেন্টস পণ্য।”
তাই একটি পণ্যের উপর নির্ভর না করে পণ্যের বৈচিত্রকরণ ও রপ্তানি বাজার বাড়ানোর কথা বললেন তিনি।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সিআইপি (রপ্তানি) ও রপ্তানি (ট্রেড) ২০১৭-এর অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ গল্প শোনান তিনি।
রপ্তানি বাণিজ্যে অবদান রাখায় ১৩৬ জনকে সিআইপি (কমার্সিয়ালি ইমপন্টেন্ট পারসন) হিসেবে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে অর্ধেক, অর্থাৎ ৬৮ জনই গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল খাতের ব্যবসায়ী। এছাড়া এফবিসিসিআই-এর পরিচালকদের মধ্য থেকে পদাধিকারবলে যারা সিআইপি হয়েছেন তাদেরও অনেকে গার্মেন্টস খাতের ব্যবসায়ী।
অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের আগে ও পরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দীন এবং এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম মুর্শেদী তাদের বক্তব্যে রপ্তানি-পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের প্রয়োজনীতা তুলে ধরেন।