নববর্ষের দিনে বিশ্বে ৩ লাখ ৯২ হাজার শিশুর জন্ম
নববর্ষের দিনে বিশ্বজুড়ে জন্মগ্রহণ করেছে আনুমানিক তিন লাখ ৯২ হাজার ৭৮টি শিশু। বুধবার ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
তাদের মধ্যে ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ শিশুর জন্ম হয়েছে বাংলাদেশে। সে হিসাবে নববর্ষের দিনে বাংলাদেশে আনুমানিক ৮ হাজার ৯৩টি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে।
প্রতিবেদনে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, নতুন একটি বছর এবং নতুন একটি দশকের সূচনা কেবল আমাদের ভবিষ্যতের জন্য নয়, আমাদের পরে যারা আসবে তাদের ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষাগুলো প্রতিফলিত করার সুযোগ। প্রতি জানুয়ারিতে ক্যালেন্ডারের বদলে যাওয়া আমাদের প্রতিটি শিশুর জীবনের যাত্রা শুরুর বিষয়ে সব ধরনের সম্ভাব্যতা ও সম্ভাবনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
বিশ্বব্যাপী জন্মগ্রহণ করা শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে আটটি দেশে-
১. ভারত — ৬৭,৩৮৫
২. চীন — ৪৬,২৯৯
৩. নাইজেরিয়া — ২৬,০৩৯
৪. পাকিস্তান — ১৬,৭৮৭
৫. ইন্দোনেশিয়া — ১৩,০২০
৬. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র — ১০,৪৫২
৭. গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো — ১০,২৪৭
৮. ইথিওপিয়া — ৮,৪৯৩
প্রতি জানুয়ারিতে নববর্ষের দিনটি বিশ্বজুড়ে শিশু জন্মগ্রহণের জন্য একটি শুভ দিন।
তবে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ নবজাতকের জন্য তাদের জন্মের এই দিনটি খুব একটা শুভ হয়ে দেখা দেয় না। ২০১৮ সালে ২৫ লাখ নবজাতক তাদের জীবনের প্রথম মাসেই মৃত্যুবরণ করে। এদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ তাদের জীবনের প্রথম দিনেই মারা যায়। এই শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই অপরিপক্ক অবস্থায় জন্মগ্রহণ, প্রসবের সময় জটিলতা ও সেপসিসের মতো সংক্রমণে মারা যায়। এই প্রতিটি পরিস্থিতিই প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে মারা যাচ্ছে এই শিশুরা। এ ছাড়াও প্রতি বছর মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে ২৫ লাখেরও বেশি শিশু।
তবে গত তিন দশকে বিশ্বজুড়ে শিশুদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্বজুড়ে পাঁচ বছর বয়স হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করা শিশুদের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। তবে নবজাতকদের ক্ষেত্রে এই অগ্রগতির মাত্রা বেশ ধীর। ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের ৪৭ শতাংশই মারা গেছে তাদের জন্মের প্রথম মাসে, যা ১৯৯০ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।
ইউনিসেফের এই প্রতিবেদনে ফোর আরও বলেন, অনেক বেশি সংখ্যক মা ও নবজাতক প্রশিক্ষিত এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি থাকা ধাত্রী বা নার্সের যত্ন পায় না। এর ফলাফল খুবই ভয়াবহ। যদি প্রতিটি শিশুর জন্ম এক জোড়া নিরাপদ হাতের তত্ত্বাবধানে হয় তাহলে লাখ লাখ শিশু তাদের জন্মের প্রথম দিন এবং এই দশক ও তার পরেও অনেক বছর বেঁচে থাকবে।