জার্মানিকে বিদায় করে শেষ আটে ইংল্যান্ড
সব রোমাঞ্চ যেন শেষ ১৫ মিনিটের জন্যই জমিয়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড। এই ১৫ মিনিটেই লেখা হলো জার্মান জয়ের গল্প। রহিম স্টার্লিংয়ের গোলে এগিয়ে যাওয়া, শেষ মুহূর্তে অধিনায়ক হ্যারি কেইনের গোলে ব্যবধান বেড়ে দ্বিগুণ। অসাধারণ এক জয়ে জার্মানিকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল ইংল্যান্ড।
মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর ম্যাচে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন রহিম স্টার্লিং। ৮৬তম মিনিটে জার্মানির জালে বল পাঠিয়ে দলের ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেন হ্যারি কেইন।
জার্মানির বিপক্ষে এই জয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো ইংল্যান্ডের। ১৯৬৬ সালের পর জার্মানির বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নক আউট পর্বের ম্যাচ জিতলো ইংলিশরা। ৬৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে জেতার পর নক আউট পর্বে জার্মানির বিপক্ষে হেরেই আসছিল তারা। ওয়েম্বলিতেও রেকর্ড পক্ষে ছিল না ইংল্যান্ডের। এই মাঠে সাত ম্যাচ পর জার্মানিকে হারালো গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
অথচ শেষ ষোলোর এই ম্যাচে বল দখলের লড়াই, আক্রমণ সাজানোয় জার্মানিই এগিয়ে ছিল। ম্যাচে ৫৫ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখে জার্মানি। জোয়াকিম লোর শিষ্যদের গোলমুখে নেওয়া ৯টি শটের ৩টি ছিল লক্ষ্যে। ইংল্যান্ড শট নিয়েছে ৫টি, এর মধ্যে ৪টিই ছিল লক্ষ্যে। দুই দলই সমান তিনটি করে কর্নার পায়।
ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই দুই দল আক্রমণ সাজানোর চেষ্টা শুরু করে। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। তবে কোনো দলই পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। ৩০তম মিনিটে ডান দিক থেকে ইয়াসুয়া কিমিখ দারুণ এক ক্রস বাড়ান। কিন্তু জায়গা মতো পৌঁছাতে পারেননি জার্মান মিড ফিল্ডার রবিন গোজেন্স।
দুই মিনিট পর জার্মানির আরেকটি আক্রমণ। সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন টিমো ভেরনার। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে গড়াতে পারেননি তিনি। ভেরনারের আক্রমণ থেকে দলকে রক্ষা করেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে আক্রমণে যায় ইংল্যান্ড। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বল নিয়ে একাই এগিয়ে যান রহিম স্টার্লিং। জার্মানির রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের বাধায় পড়ে যান তিনি। এখান থেকে বল পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো হ্যারি কেইন। কিন্তু বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারায় গোলে শটই নিতে পারেননি ইংল্যান্ডের অধিনায়ক।
৪৯তম মিনিটে দারুণ একটি শট নেন কাই হাভের্টজ। কিন্তু জার্মানির অ্যাটাকিং মিড ফিল্ডারের নেওয়া জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান পিকফোর্ড। ৭৫তম মিনিটে উৎসবে মাতে ইংল্যান্ড। হ্যারি কেইনকে বল দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন স্টার্লিং। এর মধ্যে কেইন ও জ্যাক গ্রিলিশের পা ঘুরে বল পৌঁছায় লুক শ'র কাছে। ইংলিশ লেফট ব্যাকের দারুণ ক্রসে সাইড-ফুট শটে বল জালে জড়ান স্টার্লিং।
৮৬তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইংল্যান্ড। ডি-বক্সের মধ্য থেকে বাঁ পায়ে বাঁকানো অসাধারণ একটি ক্রস বাড়ান গ্রিলিশ। নিচু হয়ে দারুণ হেডে গোল আদায় করে নেন হ্যারি কেইন। সেমি ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সুইডেন ও ইউক্রেনের মধ্যকার ম্যাচের বিজয়ীর মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।