সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে পরোয়ানা
ঋণ আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার একটি আদালত।
রোববার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস এই আদেশ দেন।
আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেলো কি না- সে বিষয়ে পুলিশকে আগামী ২২ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে গোপনে পাচার করেছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদকের উপ-পরিচালক বেনজির আহমেদ। তার আগে গত ৪ ডিসেম্বর এ অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছিল দুদক।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় থাকা অন্য ১০ আসামি হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক এমডি একেএম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ভুয়া ঋণের নামে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা করে দুদক। সংস্থার পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেছিলেন।
চার কোটি টাকা সিনহার অ্যাকাউন্টে (সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায়) স্থানান্তরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তাকে তলব করে দুদক।
সেই সাথে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেয়া এবং সেই টাকা একজন ভিভিআইপির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের অভিযোগে চলতি বছরের ৬ মে মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা নামে দুজন ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
তার আগে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবের চার কোটি টাকা জব্দ করা হয়।
২০১৭ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলার আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে বিচারপতি সিনহা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রথমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার আশ্রয় না পেয়ে পরে কানাডায় প্রবেশ করে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। এসকে সিনহা বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন।