উঠোনে মিলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নীলকান্তমণির গুচ্ছ
একেবারে উঠোনের মধ্যখানে মিলেছে নীলকান্তমণির (স্যাফায়ার) বৃহত্তম গুচ্ছ। শ্রীলঙ্কার রত্নপুরা শহরে সন্ধান মিলেছে এই তারকার।
স্থানীয় একজন রত্ন ব্যবসায়ী জানান, রত্নপুরা এলাকায় কর্মীরা তার বাড়িতে কূপ খনন করার সময় 'দৈবক্রমে' রত্নখচিত পাথরটি খুঁজে পায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিকে নীল বর্ণের পাথরটির আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য আনুমানিক প্রায় ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার।
খন্ডটির ওজন ৫১০ কিলোগ্রাম বা আড়াই মিলিয়ন ক্যারেটের কাছাকাছি; এর নাম দেয়া হয়েছে "সেরেন্ডিপিটি স্যাফায়ার"।
খন্ডটির বর্তমান স্বত্বাধিকারী গ্যামেজ বিবিসিকে বলেন, "যে কূপটি খনন করছিল, সে প্রথমে আমাদের বিরল কিছু পাথর খন্ড প্রাপ্তির কথা জানায়। পরে আমরা এই বিশাল গুচ্ছ চিহ্নিত করি"।
নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি তার পুরো পরিচয় বা ঠিকানা দিতে রাজি হন নি।
তিন পুরুষ ধরে রত্ন ব্যবসার সাথে জড়িত গ্যামেজ। পাথরটি পাবার পরেই যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এই অনুসন্ধানের বিষয়ে অবহিত করেন তিনি। তবে কর্দমাক্ত পাথরটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে বিশ্লেষণ ও সত্যায়িত করতে তার বছরখানেক সময় লেগে গেছে বলে জানান।
পরিষ্কারের সময়ে নীলাটির গা থেকে গুচ্ছ গুচ্ছ পাথর খসে পড়ে এবং জানা যায়, সেগুলোও উচ্চমানের তারকা নীলা।
রত্নপুরা, অর্থ সিংহলের রত্ন শহর; এটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কার রত্ন রাজধানী হিসাবে পরিচিত। এখান থেকে অতীতেও অন্যান্য মূল্যবান পাথর পাওয়া গেছে।
শ্রীলঙ্কা স্যাফায়ার এবং অন্যান্য মূল্যবান রত্নের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশ।
গত বছর রত্ন, কাটা হীরক এবং অলঙ্কার রপ্তানির মাধ্যমে দেশটি প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
প্রখ্যাত রত্নবিদ ড. গামিনী জোয়সা বলেন, "এর আগে এত বড় নমুনা (স্পেসিমেন) আমি আর কখনও দেখিনি। এটি সম্ভবত প্রায় ৪০ কোটি বছর আগে গঠিত হয়েছিল"।
বিশেষজ্ঞরা এও উল্লেখ করেছেন, খন্ডটির উচ্চ ক্যারেট মান থাকলেও, গুচ্ছের ভিতরে থাকা সমস্ত পাথর একই রকম উচ্চমানের নাও হতে পারে।
মহামারিতে লকডাউনের ফলে অন্যান্য সব শিল্পের মত শ্রীলঙ্কার রত্ন শিল্পও লোকসানের মুখ দেখেছে।
এখন পর্যন্ত স্যাফায়ারের গুচ্ছটিকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বিশ্লেষণ ও প্রমাণীকরণ করা হয়নি। তবু শিল্প সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা আবারও আকৃষ্ট হবে, ঘুরে দাঁড়াবে তাদের রত্ন শিল্প।
শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল জেম এন্ড জুয়েলারী অথরিটির চেয়ারম্যান থিলাক ওয়েরাসিংহে বলেন, "এটি একটি বিশেষ তারকা নীলা, সম্ভবত বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। আকার এবং মান বিবেচনায়, আমরা মনে করি এটি কোন ব্যক্তিগত সংগ্রহকারী বা জাদুঘরগুলোকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে"।
- সূত্র-বিবিসি