দেশে করোনা রোগীদের ৯৮ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশই বর্তমানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত। আজ (৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণা প্রকল্পের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেশের সকল বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়। মোট ৩০০ জন কোভিড-১৯ পজেটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।
এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ ছিল পুরুষ; ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সী রোগী গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৩০-৩৯ বছরের রোগীর সংখ্যা ছিল বেশি।
এছাড়া কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন-ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস প্রভৃতি তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে গবেষণায়। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে মৃত্যুঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
তবে গবেষণায় টিকার কার্যকারিতার বিষয়টি এখনো চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়।
কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে গতবছরের ডিসেম্বরে ইউকে বা আলফা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণের হার বেশি ছিল। পরবর্তীতে মার্চ-২০২১ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণের হার বেশি ছিল।
কিন্তু বিএসএমএমইউ এর গত এক মাসের ৩০০ স্যাম্পল এর জিনোম সিকোয়েন্সিং এ দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।
১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ, যদিও গবেষণার প্রথম ১৫ দিনে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। এছাড়া গবেষণায় একজন রোগীর ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট বা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (তদন্তাধীন ভ্যারিয়েন্ট)।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, কোভিড-১৯ এর জিনোমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশন এর ধরন, বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোমের সাথে এর আন্তঃসম্পর্ক বের করা এবং বাংলাদেশি কোভিড-১৯ জিনোম ডাটাবেজ তৈরী করাই কোভিড-১৯ জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য।
মোট ৩০০০ রোগীর স্যাম্পল সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডাটাবেজ এবং বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরী করা সম্ভব বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।