আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার ২য় পর্ব
আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
বিশ্ববাসীর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতটি বেলা ১১টায় শুরু হয়। দিল্লির মাওলানা জমশেদ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন, ইজতেমার মুরুব্বি মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
মোনাজাতে অংশ নিতে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি টঙ্গীর আশপাশে এসে অবস্থান নেন।
মোনাজাতে অতিরিক্ত মাইক: আখেরি মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। জেলা তথ্য অফিস জানিয়েছে, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগাআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগের ব্যবস্থা করেছে।
আখেরি মোনাজাতে যানবাহন চলাচলে নির্দেশনা: লাখো মুসল্লির সমাগম নির্বিঘ্ন করতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইতিমধ্যে কয়েক লাখ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করছেন। মুসল্লিদের ইজতেমা ময়দানে আসা এবং আখেরি মোনাজাত শেষে বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ টঙ্গীমুখী সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা: আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও ভাল রয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তার জন্য সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বিশেষ ট্রেন: টঙ্গীর রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে রেলওয়ে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল আন্তনগর ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। এছাড়া ১৬টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা থাকছে।
ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লি: ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনই ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৩২টি দেশ থেকে প্রায় আড়াই সহস্রাধিক মুসল্লি এ পর্বের ইজতেমায় যোগ দেন। ভাষাভাষী ও মহাদেশ অনুসারে ময়দানে পৃথক তাঁবুতে রয়েছেন মেহমানরা। তাদের জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুক্রবার ভোরে শুরু হয় হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ফজরের নামাজের পর ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ ওসমানের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ৫৫তম ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়া তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী তাবলীগের সদস্যরা এ পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
বিশ্ব ইজতেমার এবারের পর্বে ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি যোগদান না করলেও তার পক্ষে তাবলীগের শীর্ষ মুরব্বি ও আলেমসহ ৩২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছেন।