রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ আইসিজের
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
গত মাসে মিয়ানমারের কার্যত নেতা অং সান সু চি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করার পরও আদালত এ রায় দিল।
নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত পিস প্যালেসে সকাল ১০টায় শুনানি শুরু হয়। আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুলকাওয়ি আহমেদ ইউসুফ আদালতের আদেশ পড়ে শোনান।
বৃহস্পতিবার দেওয়া রায়ে বলা হয়েছে, সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে চার মাসের মধ্যে আইসিজেকে জানাতে হবে মিয়ানমারের।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অভিযোগের মধ্যে ছিল হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন, ভৌত বিনাশ বয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি, জন্মরোধের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া ও জোরপূর্বক স্থানান্তর। এগুলো গণহত্যার বৈশিষ্ট্য। কারণ এসবের উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়া।
গণহত্যা কনভেনশনের আলোকে করা এ মামলায় গাম্বিয়া অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থার অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের প্রধান বিচারসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান আইসিজে আদেশ দিয়েছে।
এর আগেও গণহত্যা কনভেনশনের আলোকে মামলা পরিচালনা করেছে আইসিজে। ১৯৯৩ সালে এ ধরনের প্রথম মামলার রায়ে সার্বিয়াকে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা নিতে বলে জাতিসংঘের বিচার আদালত।
সে সময় আদালত নিশ্চিত হয়, বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় গণহত্যা প্রতিরোধ ও গণহত্যা সংঘটনকারীদের বিচারে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়েছে সার্বিয়া।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা এ মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ।
কানাডা, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, তুরস্ক ও ফ্রান্স জোর দিয়ে বলেছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে। অন্যদিকে মিয়ানমারকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) তার সদস্যভুক্ত ৫৭ রাষ্ট্রকে তাগিদ দিয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এতে গণধর্ষণ, হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তবে বিভিন্ন সময় মিলিয়ে বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।