সুমো কেবল কুস্তি নয়, ধর্মাচারও
ঐতিহাসিকদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ আছে বলেই তারা জোর দিয়ে বলতে পারেন কুস্তি হচ্ছে পৃথিবীর প্রাচীনতম খেলা। ফ্রান্সের লাসক গুহার দেয়ালে কুস্তির যে ছবি আঁকা হয়েছে, তা ১৫ হাজার ৩০০ বছর আগের। সমাজের শক্তিশালী মানুষ টিকে তা নির্ধারণের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই কুস্তিকে মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। যিনি জিতবেন তিনি সবচেয়ে শক্তিমান। কুস্তির একটি বিশেষ ধরন সুমো, যা শিন্টো-ধর্মাবলম্বীদের ধর্মাচার হিসেবে গৃহীত।
সম্পূর্ণভাবে গায়ে গায়ে লেগে শক্তি প্রয়োগ করে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিজয়ের লক্ষ্যে খেলা। ৪ দশমিক ৫৫ মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তাকার রিং থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড়কে ঠেলে বের করে দেওয়াই বিজয়। পা ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বীর শরীরের অন্য কোনো অংশ ভূমিতে স্পর্শ করানোটাও সাফল্য।
জাপানের টোকিও, ওসাকা, নাগোইয়ার ফুকুদাতে সুমো টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একেকটি টুর্নামেন্ট চলে ১৫ দিন।
ফুটবলে যেমন থার্ড ডিভিশন থেকে সেকেন্ড ডিভিশনে ওঠে, সেকেন্ড থেকে ফার্স্ট ডিভিশনে, সুমোতে এমনকি সেরাদেরও পাঁচটি ডিভিশন—সর্বনিম্নে মেগাশিরা, তারপর কোমোসুবি, সেকিওয়াকে, ওজেকি এবং সর্বোচ্চ র্যাঙ্ক ইয়োকোজুনা সুমো। প্রতিযোগীদের বলা হয় রিকিশি। খ্যাতনামা গ্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন বা ইয়োকোজুনাদের মধ্যে রয়েছেন—আমাশি (১৬ শতক), মারুইয়ামা (১৭১২-১৭৪৯), তানিকাজে (১৭৫০-১৭৯৫), ওনাগাওয়া (১৭৫৮-১৮০৫), অনুসাতসু (১৭৯১-১৮৫১)।
বুলগেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, জর্জিয়া, তুরস্ক ও হাওয়াই থেকেও উঠে এসেছেন কজন বিখ্যাত রিকিশি বা সুমো কুস্তিগির।
দেড় হাজার বছর আগে সুমোর বিকাশ ঘটলেও আধুনিক সুমোর আইনকানুন প্রণয়ন করা হয় বিংশ শতকেই।
রিকিশিরা যে নেংটি পরেন, তা যেনতেন গামছা নয়, কাপড়টি দৈর্ঘ্যে ১০ গজ এবং প্রস্থে ২ ফুট। চুলের ফ্যাশন গিংকো পাতার মতো। সুমোর যে বিশেষ রিং তৈরি করা হয়, তার জন্য বিশেষ ধরনের কাদার প্রয়োজন, রিং তৈরির পর তার ওপর বালি ছিটিয়ে দেওয়া হয়।
পৃথিবীর প্রায় সব খেলা খেলাই। অন্যতম ব্যতিক্রম সুমো। শিন্টো ধর্মীয় আচার থেকে সুমোর উদ্ভব প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। পবিত্র উপাসনাগারে আত্মাকামীর প্রতি সম্মান জানাতে যেসব আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো, তার একটি সুমো। সন্তুষ্টকামী তখন অঢেল শস্যের উৎপাদন নিশ্চিত করতেন। শত শত বছর পার হওয়ার পর, এমনকি মানুষের ধর্মবিশ্বাসও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, একালের সুমো ধর্মীয় আচার হিসেবেই সমাদৃত হচ্ছে। সুমো রিংয়ে প্রবেশ হচ্ছে শিন্টো আত্মশুদ্ধিকরণ। আর তাই সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সব ইয়োকোজুনা (সুমোর সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধারী) প্রথম রিংয়ের প্রবেশ করেন আনুষ্ঠানিকভাবে টোকিওর মেইহি সৌধে। এখানকার সুমো রিংয়ের ওপর যে চাদোয়া টাঙানো, তা শিন্টো ধর্মীয় স্থানের মডেলে বানানো।
বড় কঠিন সুমোজীবন
ভায়োলেট ক্লাউটম্যান লিখছেন, হাকুবাতে একজন রেস্তোরাঁ মালিকের সঙ্গে আমার দেখা, তিনি সাবেক সুমো কুস্তিগির। তিনি তার সুমোজীবনের কৃতিত্বের কথা খুব আগ্রহভরে বলছিলেন। কিন্তু আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম—তিনি এই জীবন কতটা উপভোগ করেছেন। তিনি এমনভাবে আমার দিকে তাকালেন যেন আমি তার খাবারে একদলা থুতু নিক্ষেপ করেছি।
আসলে সুমো খোঁয়াড়ে কিংবা আস্তাবলে (ইংরেজিতে স্ট্যাবলই বলা হয়) সুমো কুস্তিগিরদের জীবন ভয়াভয় কষ্টের। শরীর ও স্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য এ জীবনই মেনে নিতে হয়। সেখানে অনেকটাই শৃঙ্খলিত ও রেজিমেন্টেড জীবন। আস্তাবলে বাস করার সময় কুস্তিগির হিসেবে যিনি যত কম মর্যাদার, তার দুর্ভোগ ও কষ্ট তত বেশি। রান্না করা, ঘরদোর পরিষ্কার করা, খাবার পরিবেশন করা, জ্যেষ্ঠদের ফুটফরমাশ খাটা সবই তাদের করতে হয়। তাদের শরীরটাকে আঘাত-সহনীয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের বর্বরোচিত শাস্তিও প্রদান করা হয়। সিনিয়রদের খামখেয়ালিপনা ও বেপরোয়া আক্রমণে (রিং-বহির্ভূত আক্রমণ) তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটে।
নারীর জন্য সুমো নয়!
পৃথিবীর প্রায় সব খেলাতেই—ফুটবল, ক্রিকেট থেকে শুরু করে বক্সিং, কুস্তি, সব ধরনের জিমন্যাস্টিকস—কোথায় নারী নেই? সর্বত্র আছে, কিন্তু বড় ব্যতিক্রম সুমো। সুমো অ্যাসোসিয়েশন সুমো রিংয়ে নারীর প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করছে। এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট আবেদন-নিবেদনের পর জাপানি নারীরা জানে, এটি তাদের খেলা নয়।
২০০০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ওসাকা রাজ্যের গভর্নর ছিলেন একজন নারী ফুসা ওতা। ঐতিহ্যগতভাবে সুমো চ্যাম্পিয়নকে গভর্নর্স প্রাইজ গভর্নর নিজ হাতে দিয়ে থাকেন। কিন্তু সুমোর পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য সুমো অ্যাসোসিয়েশন তাকে প্রত্যাখ্যান করল। তিনি আট বছর ধরে বলে গেলেন, নারী হিসেবে নয়, গভর্নর হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে আসতে চান। কিন্তু সুমো অ্যাসোসিয়েশনের একই জবাব, আমরা দুঃখিত, নারী নিষিদ্ধ। তিনি আর যেতে পারেননি। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল না। আঠারো শতকের শুরুতে নারী সুমো কুস্তিগির ছিলেন। কিন্তু শিন্টো-ধর্মাবলম্বীরা কোনো কোনো স্থানে, সহিসরা পর্যন্ত বাধা প্রদান করে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুমো নারীর জন্য নিষিদ্ধ হলেও কোথাও কোথাও নারীর অপেশাদারত্ব সুমো কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে।
ইয়োকোজুনা র্যাঙ্ক
এটিই সুমোর সর্বোচ্চ র্যাংক। ৩০০ বছর আগে সুমো র্যাঙ্কিং সূচিত হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত এই সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধারীর সংখ্যা মাত্র ৭২; বর্তমানে সক্রিয় ইয়োকোজুনা রয়েছেন ৪ জন। সর্বশেষ পদোন্নতিপ্রাপ্ত ইয়োকোজুনা হচ্ছেন কিসেনোসাতে, তিনি গত ২০ বছরে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রথম জাপানি ইয়োকোজুনা।
লবণ নিক্ষেপ
রণক্ষেত্র বা সুমো রিংকে পরিশুদ্ধ করতে এবং কুস্তিগিরদের জখম হওয়া থেকে রক্ষা করতে লবণ নিক্ষেপ করা হয়। এটি ধর্মীয় বিশ্বাস। রিংয়ে কুস্তিগিরদের মারাত্মক আহত হওয়া এবং মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে।
কেশো মায়াশি
সুমো প্রতিযোগিতা ও একটি উদ্যাপন। উচ্চ মর্যাদার রিকিশিরা মূল্যবান অ্যাপ্রন (বর্ণিল লুঙ্গির মতো) পরেন এবং লাইন ধরে হেটে যান—অনেকটা বিশ^বিদ্যালয়ের কনভোকেশন প্যারেডের মতো।
বিংশ শতকে এসেই রিকিশির তিমি আকৃতির দেহ আমাদের চোখে পড়ছে। এমনটা আগে ছিল না। তাকানোইয়ামা শুনতারো ছিলেন মিনি সুমো। দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে বিশালদেহী সুমোদের আয়ুষ্কাল গড়পড়তা জাপানির আয়ুষ্কালের চেয়ে ২০ বছর কম।
সুমো পালোয়ান হাকুহু শো
ইয়োকোজুনা মানে সুমো কুস্তির সর্বোচ্চ পদধারী। একালের সবচেয়ে আলোচিত এবং বিখ্যাত সুমো কুস্তিগির হচ্ছেন হাকুহু শো। তিনি জাপানি নন, মঙ্গোলিয়ান। সুমোর ইতিহাসে জাপানি নন এমন চারজন মাত্র ইয়োকোজুনা হতে পেরেছেন। তাদের মধ্যে দুজনই মঙ্গোলিয়ার।
মঙ্গোলিয়ার ওলানবাটোর শহরে একটি বিখ্যাত কুস্তিগির পরিবারে হাকুহুর জন্ম ১১ মার্চ ১৯৮৫ সালে। ১৯৬৮ সালের সামার অলিম্পিকে ফ্রি স্টাইল রেসলিং ইভেন্টে তাঁর বাবা জিজিতিন মঙ্কবাত সিলভার মেডেল পেয়েছিলেন। আর এটাই ছিল মঙ্গোলিয়ার জন্য প্রথম অলিম্পিক পদকপ্রাপ্তি।
হাকুহুর প্রকৃত মঙ্গোলিয়ান নাম মঙ্কবাতিন দাভাজারগাল, সুমোর জন্যই সুমো নাম নিয়ে হাকুহু শো হলেন। হাকুহু মঙ্গোলিয়ান কুস্তির কোনো প্রশিক্ষণ নেননি, বাবার চাওয়া ছিল ছেলে অন্য কোনো খেলাতে নাম করুক, যেমন বাস্কেটবল। কিন্তু ছেলের ব্যস্ততা সুমো ম্যাগাজিন নিয়ে। তিনি বাবাকে জানিয়ে দেন, তিনি সুমো নিয়েই থাকবেন। সে সময় তিনি আকারে গড়পড়তা সুমো কুস্তিগিরের নিচে, ওজন কম।
২০০০ সালের অক্টোবরে ১৫ বছর বয়সে একজন মঙ্গোলিয়ান কুস্তিগিরের সহায়তায় জাপান এলেন। মাত্র ৬২ কেজি ওজনের বালককে সুমো প্রশিক্ষণ দিতে কেউ রাজি হননি। পুরো দুই মাস চেষ্টার পর শেষ দিন, যেদিন মঙ্গোলিয়া ফিরে যাওয়ার কথা। মঙ্গোলিয়ান কুস্তিগির কাইয়োকুশুজানের অনুরোধে মিয়াজিনোর আস্তাবল বা খোঁয়াড়ে তাকে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে রাখতে সম্মত হয়। তার নাম দেওয়া হয় হাকুহু শো। হাকু মানে সাদা, আর হু মানে পৌরাণিক পাখি পেঙ্গ।
খেয়েদেয়ে ওজন বাড়িয়ে ২০০১ সালে ওসাকাতে প্রথম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে দ্বিতীয় কাতারের সুমো হিসেবে স্বীকৃত হন এবং ফাইটিং স্পিরিটের জন্য বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালের মে মাসে প্রথম টুর্নামেন্টে ১৪-১ রেকর্ড করে (১৫ রাউন্ডের ১৪টিতেই জিতে) মিয়াবিয়ামাকে পরাজিত করেন। তখনই সুমো পণ্ডিতেরা ভবিষ্যদ্বাণী করেন, তার মধ্যে ইয়োকোজুনা হওয়ার সম্ভবনা লুকিয়ে আছে। যে ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত করতে দীর্ঘ সময় নেননি। পরের বছরই ১৫-০-তে ওসাকা টুর্নামেন্ট জিতে আরও এগিয়ে যান। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম ইয়োকোজুনা খেতাবধারী হলেন। ২০২০ সাল পর্যন্ত রেকর্ডসংখ্যক বিজয়ের অধিকারী হয়ে সুমোর সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কারগুলো পেলেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং রিংয়ে ফিরে আসছেন।
সুমোর কিছু নামধাম
দোহিও : সুমোর রিং
সুমো শব্দ : এ থেকে জেড
সবগুলো নয়, কিছু কিছু সুমোশব্দ জেনে রাখা ভালো:
আমাজুমো : শৌখিন অপেশাদার সুমো। অপেশাদার কিংবা সাবেক পেশাদার, কিংবা সুমোতে আগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, যেমন নারী ও শিশু প্রমুখের লড়াই।
আজুকারি : খেলা ড্র। ১৯১৭ সাল থেকে আজুকারি বাতিল করা হয়েছে, খেলার সিদ্ধান্ত দেওয়া না গেলে পুনরায় লড়াই হবে।
বানজুক : কোনো নির্দিষ্ট টুর্নামেন্টে র্যাঙ্ক অনুযায়ী অংশগ্রহণকারী সুমো কুস্তিগিরদের তালিকা। তালিকাটি সুমোজি নামের ক্যালিওগ্রাফিতে সাজানো।
বানজুক গাই : তালিকাভুক্ত সুমো কুস্তিগির নন এমন কেউ; আবার জখম কিংবা অন্য কোনো কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছে এমন কেউও হতে পারেন।
বাশো : সুমো লড়াইয়ের ভেন্যু।
বিনজুক : সুমো কুস্তিগিরের চুলে মাখার ক্রিম, সুঘ্রাণযুক্ত এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিকারী।
শাঙ্কোনাকে : সুমো কুস্তিগিরদের একটি সাধারণ খাবার মুরগি, মাছ; কখনো গরু ও সবজিমিশ্রিত প্রোটিন খাবার।
শিকারান মিজু : পাওয়ার ওয়াটার বা শক্তি জোগানদাতা পানি। পূর্ণ পানি দিয়ে আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে সুমোযোদ্ধা মুখম-ল ধুয়ে থাকেন। তবে একজন বিজয়ী সুমোকে প্রতিযোগীর হাতে এ পানির পাত্র তুলে দিতে হয়।
শনমাগে : সুমো কুস্তিগিরদের ঐতিহ্যগত চুল কাটার শৈলী। চুল দেখেই চেনা যায়।
দানপাৎসু শিকি : খ্যাতিমান সুমো কুস্তিগিরদের অবসর গ্রহণ উৎসব। এই সম্মানজনক বিদায় পেতে হলে কমপক্ষে ৩০টি টুর্নামেন্টে বিজয়ের রেকর্ড আনতে হবে। প্রকৃতপক্ষে সুমো রনাঙ্গণ ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মাস পর আনুষ্ঠানিক উৎসবের মাধ্যমে চুলের ওপরের গিঁঠ (টপ নষ্ট) কেটে দেওয়া হয়।
দোহিও : সুমো কুস্তির রিং, বিশেষ ধরনের মাটি দিয়ে এই বৃত্ত তৈরি করে বালি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। কুস্তিটা হয় রিংয়ের ভেতরে।
ফুদাদোম : সুমো কুস্তির ১০০ ভাগ টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে এমন অবস্থা, অবশ্য প্রয়োজনের নিরিখে ৭৫ থেকে ৯৫ ভাগ টিকেট বিক্রি হলেই সর্বশ্রেষ্ঠ কর্মকর্তারা ফুদাদোম ঘোষণা করতে পারেন।
ফানাদোশি : সুমো লেংটি। সুমো কুস্তিগিরের জন্য আনুষ্ঠানিক ও কারুকার্যময় লেংটি।
ফুসেনপল : নির্ধারিত লড়াইয়ে উপস্থিত না হওয়ার কারণে পরাজয়, ওয়াকওভার প্রদান। এমনকি লড়াই চলাকালে আহত হওয়ার কারণে কিংবা কোনো মানসিক চাপে বাকি লড়াই থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াও তাই।
ফুসনশো : প্রতিপক্ষের অনুপস্থিতির কারণে বিজয়। ১৯২৭ থেকে এই আইন কার্যকর হয়।
গাবুরি ইয়োরি : বুক দিয়ে প্রতিপক্ষ সুমোকে ধাক্কা দেওয়া।
গুনবাই : যুদ্ধকালীন ব্যবহৃত হাতপাখা, সাধারণত কাঠের তৈরি। সৈন্যদের কমান্ড করার জন্য সামুরাই কমান্ডাররা গুনবাই ব্যবহার করতেন। সুমো রেফারি ও গুনবাই ব্যবহার করে তার নির্দেশনা দেন এবং বিজয় ঘোষণা করেন।
গিয়োজি : সুমো রেফারি।
গুনবাই দোরি : গুনবাই নির্দেশনা দৃঢ়করণ। গুনবাই অনুসারে।
হাক্কিইয়োই : যখন দুই কুস্তিগির যুদ্ধরত অবস্থায় অনড়, তখন রেফারি চিৎকার করে এ কথা বলেন, তার মানে জোরসে লাগাও, শক্তি খাটাও।
হানামিচি : সুমো রিং থেকে পূর্ব ও পশ্চিমগামী পক্ষের রাস্তা। যেখানে সুমো প্রস্তুতি চলে, গ্রিনরুম।
হারিদাসি : যদি কোনো প্রতিযোগিতায় শিরোপা পাওয়ার যোগ্য দুয়ের অধিক সুমো কুস্তিগির থাকেন।
হাজুশি : প্রতিপক্ষের বগলতলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে তাঁকে উঁচিয়ে ফেলা।
হেনকা : আক্রমণ ঠেকাতে একদিকে সরে যাওয়া।
হেয়া : কক্ষ, এ ক্ষেত্রে সুমো প্রশিক্ষণকক্ষ।
হেয়াগাসিরা : কোনো হেয়াতে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সুমো কুস্তিগির।
হিগি : টেকনিক-বহির্ভূত চাল।
কিমারিতে : সুমো লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়ার টেকনিক, শেষ চাল, তারপরই রেফারি বিজয়ী ঘোষণা করেন।
কাচি-কোশি : যে কুস্তিগিরের হারের চেয়ে জেতার পরিমাণ বেশি।
কাচি-নোকরি : রিংয়ে রয়ে যাওয়া সর্বশেষ বিজয়ী।
কিকো : সুমো প্রশিক্ষণ চর্চা
কিনজিতে : নিষিদ্ধ হাত, ফাউল করার উদ্যোগ।