'মামলার খবরেই দেশ ছাড়েন' পুলিশ ইন্সপেক্টর সোহেল রানা
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ'র হাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা'র গ্রেপ্তার হবার খবর ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার হলেও ঢাকায় পুলিশের কোন দপ্তর তার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি।
তবে, গুলশান থানা পুলিশের একটি সূত্র দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছে যে গত সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় ই-অরেঞ্জের প্রতারণার বিষয়ে একটি মামলা রুজু করা হয়, যাতে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে বহুল সমালোচিত বনানী থানার পরিদর্শক পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা'কে।
গত ১ সেপ্টেম্বর, ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ১৭ জন প্রতারিত গ্রাহকের পক্ষে একটি মামলা করেন মো. রাসেল নামের একজন। ৮৮ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয় মামলায়।
ওইদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া বাদী মো. রাসেলের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এবং একই সাথে অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা রুজু করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান থানাকে আদেশ দেন।
আদেশে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া বলেন, নালিশে বর্ণিত অভিযোগসমূহকে প্রাথমিক তথ্য হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদেশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে প্রেরণ করার জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হইলো।
আদালতের এমন আদেশকে, আমলে নিয়ে পরদিন ৮৮ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১৮ টাকা আত্মসাতের মামলাটি গুলশান থানায় রুজু করে পুলিশ। বিষয়টি টিবিএস'কে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান।
মামালার বাদী মো. রাসেল আসামি শেখ সোহেল রানা যে কোন মূর্হর্তে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলেও মামলার এজাহার উল্লেখ করেন। একই সাথে গত ১৮ আগস্ট বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাসহ মোট দশজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে চায়নি বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী। তার প্রায় দুই সপ্তাহ পরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি গ্রহণ করতে আবেদন করেন বাদী মো. রাসেল।
তবে, শুরুতেই শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে কেন মামলা নেয়া হয়নি এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশের গুলশান বিভাগের একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে জানান, মূলত ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠার শুরু থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখেন শেখ সোহেল রানা। তবে আগে দায়ের করা দুটি মামলায় তাকে আসামি না করায় তিনি কিছু নির্ভার ছিলেন। তবে, গত ২ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলাটি গ্রহণ করায় কিছুটা চাপে পড়েন তিনি। ওইদিন রাতেই বনানী থানা থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যান শেখ সোহেল রানা। মূলত, গ্রেপ্তার এড়াতেই ভারত হয়েই অন্য কোন দেশে যেতে চেয়েছিলেন বিতর্কিত এই পুলিশ কর্মকর্তা।