সেপ্টেম্বরেই ৫-১১ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের তথ্য জমা দেবে ফাইজার
এ মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় শিশুদের ওপর চালানো ভ্যাকসিন ট্রায়ালের তথ্য জমা দেবে ফাইজার। তারপরই ৫ বছর বয়স থেকে শিশুদের টিকাদান শুরু হতে পারে।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের মার্চ মাসে ফাইজার ঘোষণা দেয় ৬ মাস বয়সী শিশুদের ওপরও জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দুই ডোজ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী ডা. আলবার্ট বোরলার জানিয়েছেন, পাঁচ বছর থেকে ১১ বছর বয়সীদের ওপর চালানো এর আগের ট্রায়ালের ফলাফল সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, "ভ্যাকসিন শিশুদের মধ্যে অনেক ভালোভাবে কাজ করে। এ মাসের মধ্যে পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সীদের নিয়ে চালানো ট্রায়ালের ফলাফল জমা দেওয়ার কাজ করছি আমরা,"
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এর পরই দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সীদের নিয়ে করা ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশিত হবে। ছয় মাস থেকে দুই বছর বয়সীদের তথ্য অক্টোবর বা নভেম্বরে প্রকাশিত হতে পারে।
টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাইজারের ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজের অনুমোদন নেওয়ার উদ্যোগের পাশাপাশি পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সীদের ট্রায়ালের তথ্যও যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনে (এফডিএ) জমা দেওয়া হবে।
সাধারণ ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত ডোজের চেয়ে কম- ১০ মাইক্রোগ্রামের এ ভ্যাকসিন ২১ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজের ভ্যাকসিন দিয়ে ট্রায়ালে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। ১২ বছর ও ততোর্ধ্ব বয়সীদের জন্য তৈরি ভ্যাকসিনে এ পরিমাণ ৩০ মাইক্রোগ্রাম।
যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ১২ বছরের বেশি বয়সী ১ কোটির বেশি শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ টিকা বিষয়ক যৌথ কমিটি (জেসিভিআই) এ ক্ষেত্রে আগে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভোগা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আগে ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
জেসিভিআই বলছে, সুস্থ শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের সুফল আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত ঝুঁকির পার্থক্য খুবই কম। তাদের প্রতিবেদনে এমআরএনএ ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 'মায়োকার্ডিটিস' নামের হৃদপিণ্ডের পেশী ফুলে যাওয়ার সমস্যার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা বিরল।
তবে গতকাল ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফপিএমএ) আয়োজিত ব্রিফিং-এ ফাইজারের ডা বোরলা জানান, বৈজ্ঞানিক নীরিক্ষার ফল শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার পক্ষেই আছে।
"কাদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত তা বলার দায়িত্ব আমার উপর না। তবে আমি এটুকু অন্তত বলতে পারি, কম বয়সীরাও অসুস্থ হচ্ছে… বেশি বয়সীদের মধ্যে গুরুতরভাবে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি হলেও, শিশুদের কোনো ঝুঁকি নেই তা না,"
"আমাদের আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, শিশুদের স্কুলে ক্লাস করতে হবে। একারণে তাদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়বে,"
"ভ্যাকসিন শিশুদের মধ্যে বেশ কার্যকর," বিশ্বের অনেকে দেশেই ১২ বছর ও ততোর্ধ্ব বয়সীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যেও শীঘ্রই এ বিতর্কের অবসান হবে। জেসিভিআই-এর পরামর্শ মানা হবে নাকি টিকাদানের বৃহৎ পরিসরের প্রভাব বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ করছেন দেশটির শীর্ষ মেডিক্যাল কর্মকর্তারা।