ব্যাংকে টাকা না জমিয়ে বিসিবিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে খরচ করতে বলছেন দুর্জয়
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের একটি কক্ষে সফর শুরু করা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিবি) এখন টাকার পাহাড়ে। কিছুদিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, খরচ বাড়ার পরেও বিসিবির মোট সম্পদের পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করা আছে ৫৪৫ কোটি টাকার মতো।
বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের উন্নতির পাশাপাশি বিসিবি কোষাগারও সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে। প্রতি অর্থ বছরে খরচের পরও উদ্বৃত্ত থেকে যায়, যা জমা রাখা হয় ব্যাংকে। কিন্তু ব্যাংকে টাকা জমিয়ে রাখার পক্ষে নন নাঈমুর রহমার দুর্জয়। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির বর্তমান পরিচালক মনে করেন, এই টাকা জমিয়ে না রেখে ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতিতে আরও বেশি ব্যয় করা উচিত।
ঘনিয়ে এসেছে বিসিবির নির্বাচন। আগামী ৬ অক্টোবর দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারও নির্বাচন করছেন দুর্জয়। সোমবার বিসিবিতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক। এ সময় অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। এর মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতিতে কাজ করার ব্যাপারে বেশি জোর দেন তিনি।
আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আলোচনা বহুদিনের। কিন্তু বিষয়টি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৭ সালে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে আঞ্চলিক ক্রিকেটের কার্যক্রম শেষ করা হবে। কিন্তু কয়েক বছর পরও বিষয়টি আলোচনার টেবিলেই থেকে গেছে। দুর্জয় মনে করেন, টাকা ব্যাংকে জমিয়ে না রেখে আঞ্চলিক ক্রিকেট ও অ্যাকাডেমির উন্নয়নে আরও বেশি ব্যয় করা উচিত বিসিবির
দুর্জয় বলেন, 'চট্টগ্রাম ক্রিকেট আসোসিয়েশনের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং সিলেটে কাজ আগাচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে আগে একটা সময় ছিল, যখন বোর্ডের সংকীর্ণতা ছিল, সীমাবদ্ধতা ছিল। সেইগুলো কিন্তু এখন নেই। আমরা যদি শুধু মনে করি টাকা জমিয়ে রাখা, এফডিআর করা; এই বিষয়গুলো থেকে বেড়িয়ে এসে আঞ্চলিক ক্রিকেটের উন্নয়নে, অ্যাকাডেমির উন্নয়নে আরও বেশি ব্যয় করা উচিত।'
বোর্ড পরিচালক হলে এ নিয়ে শক্ত সুপারিশ থাকবে কিনা? এমন প্রশ্নে দুর্জয় জানান, আগেও এ নিয়ে শক্ত সুপারিশ ছিল, এবারও তাই থাকবে। বিসিবি পরিচালক পদে বর্তমান মেয়াদে হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। নিজের কাজ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।
দুর্জয় বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ খুশি। আমি এইচপি দলকে নিয়ে কাজ করতে পেরেছি। কারণ এই জায়গাটাকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখার কোনো সুযোগ নেই। অন্যন্য দিকগুলোর যেমন প্রয়োজনীয়তা আছে, এইচপিরও ক্রিকেটের উন্নয়নে তেমন প্রয়োজনীয়তা আছে। সেই দিক বিবেচনা করলে আমি অন্য কোনো বিভাগের দিকে অতোটা চোখ রাখি না। অন্য বিষয়গুলো যিনি বোর্ড সভাপতি হন, তিনি দেখেন। আমি এইচপি দলের সঙ্গে থেকেই খুশি।'
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগেও কাজ করেছেন দুর্জয়। পরে তাকে সরিয়ে আকরাম খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও এই বিভাগে নিজের সফলতার গল্প শোনালেন দুর্জয়, 'আমি দুটি জায়গায় কাজ করেছি, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে কাজ করেছি ২০১৫ বিশ্বকাপের সময়। সেখানেও আমি সফলভাবে কাজ করেছি। কারণ বিশ্বকাপে ভালো খেলার শুরুটা কিন্তু আমাদের ২০১৫ থেকে। সেখানে ভালো ফলাফল করেছি। এরপর হাই পারফরম্যান্স, জাতীয় দলের পাইপলাইন, তরুণ খেলোয়াড় ৬-৭ জন যারা হাই পরফরম্যান্সকে প্রতিনিধিত্ব করছে, এটা কিন্তু আমার জন্য বড় বিষয়।'