চলতি অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭৮৬ মিলিয়ন ডলার বিক্রি
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার ধারাবাহিকতায় অর্থনীতি সচল হতে শুরু করায় আমদানি চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে দেশের বাজারে ডলারের দাম ও ডলার বিক্রি বাড়ছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭৮৬ মিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছে।
গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের কাছে ৫৫ মিলিয়ন এবং বাকি ৪৫ মিলিয়ন ডলার অন্যান্য কয়েকটি ব্যাংক ক্রয় করেছে।
এর আগে সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক আমদানিকৃত কোভিড টিকার মূল্য পরিশোধ ও তাদের গ্রাহকদের এলসির মূল্য পরিশোধের জন্য ৮৫ মিলিয়ন ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে কিনেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, ব্যাংকগুলোর ঘোষিত মুদ্রা বিনিময় হার নগদ ডলারের দাম সবচেয়ে বেশি উঠেছে ব্র্যাক ও এনআরবিসি ব্যাংকে। ব্যাংকগুলোর নগদ ডলারের দর ছিল ৮৮ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া বেশিরভাগ ব্যাংকই ৮৭ টাকা থেকে ৮৮ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।
এদিকে চাহিদা বাড়ায় দেশে মার্কিন ডলারের দাম বেড়েই চলছে। এতে করে টাকার মান কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রয় বাড়ালেও দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না।
বুধবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দাম আরও ১২ পয়সা বেড়ে ৮৫ টাকা ৪৭ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। তবে খোলাবাজার ও নগদ মূল্যে ডলার আরও বেশি কেনাবেচা হচ্ছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, কোভিড প্রভাব কমে আসায় দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কম আসছে। গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ ছাড়া প্রত্যাশা অনুযায়ী আসছে না রপ্তানি আয়।
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মুলধনী যন্ত্রপাতিসহ এলসির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ডলারের চাহিদা বাড়ছে, কমছে টাকার দাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডলার রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের কাছে ডলার কিনতে পারে কারণ আমাদের ডলারের ঘাটতি নেই।
এর আগে বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই সময়ে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছে। তার আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ, যা গত অর্থবছরে কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ধরে রেখেছিল, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৯% হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, এ বছরের জুলাই-আগস্ট সময়কালে ৩.৬৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাওয়া গেছে, যা গত বছরের একই সময়ে পাওয়া ৪.৫৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কম।
২০২০ সালের আগস্টের তুলনায় এই বছরের আগস্টে, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮% কমে ১.৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।