সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট ঘানির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র
তালেবানের কাবুল দখলের প্রাক্কালে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের নগদ অর্থ নিয়ে দেশে ছেড়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছিল সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির বিরুদ্ধে। এবার এই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের এক উপকমিটির সামনে এই তদন্তের কথা জানান আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য নিয়োজিত বিশেষ মহাপরিদর্শক।
গত মাসে টুইটারে পোস্ট করা ইংরেজিতে লেখা এক চিঠিতে ঘানি বলেছিলেন, রক্তপাত এড়াতে ১৫ই আগস্ট তালেবানরা কাবুলে প্রবেশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি আফগানিস্তান ত্যাগ করেছেন। তবে পালানোর সময় আফগান জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত ১৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি নগদ অর্থ সাথে করে নিয়ে যাওয়ার খবরটি সরাসরি অস্বীকার করেন তিনি। এই অভিযোগকে "স্পষ্ট এবং সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা" বলে অভিহিত করেন তিনি।
তবে একাধিক বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে এই অভিযোগ এসেছে। মহাপরিদর্শক জন এফ সপকো কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য প্রদানকালে জানান, তার কার্যালয় অন্য একটি সংসদীয় কমিটির অনুরোধে এই অভিযোগগুলো তদন্ত করছে।
গত আগস্টে তাজিকিস্তানের আফগান রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঘানি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ১৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছেন। এই কূটনীতিক ইন্টারপোলের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাবেন বললেও নিজের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি তিনি।
আগস্টে তালেবানের কাছে উচ্ছেদ হওয়া আফগান সরকার বৈদেশিক সাহায্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। এসব বৈদেশিক সাহায্যের সিংহভাগই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই।
২০০১ সালের পর থেকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী, সরকার, অর্থনীতি এবং সুশীল সমাজের পুনর্গঠনের জন্য প্রায় ১৪৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে ওয়াশিংটন। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করার পরেও দেখা গেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপকে পুনর্নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র, এরচেয়েও বেশি অর্থ তারা খরচ করেছে আফগানিস্তানের পিছনে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চুক্তিভিত্তিক জালিয়াতি ও অপচয় তদন্ত করতে ২০০৮ সালে আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য বিশেষ মহাপরিদর্শকের কার্যালয় খোলার ঘোষণা দেয় কংগ্রেস। দুই দশক আগে তালেবানের প্রথম পতনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সব আফগান কর্মসূচি এবং কার্যক্রমের উপর এখতিয়ার রয়েছে এই কার্যালয়ের।
মার্কিন অর্থ নিয়ে পালানোর অভিযোগ শুধু ঘানির বিরুদ্ধেই আসেনি। সপকো কংগ্রেসের সামনে বলেছেন, আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক মিলিয়ন ডলার নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
"কিন্তু সেগুলো শুধুই অভিযোগ, আমরা এখনও এ অভিযোগগুলো নিশ্চিত করতে পারিনি," যোগ করেন তিনি।
- সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।