জুলাইয়ে সঞ্চয়পত্রে নীট বিক্রি কমেছে ৫৪ শতাংশ
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে নীট সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে প্রায় ৫৪ শতাংশ। যা নীট বিক্রির পরিমাণ ছিল ২১০৪ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের শেষ মাস অর্থাৎ জুনে সঞ্চয়পত্রে নীট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৫৭৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে এ চিত্র দেখা গেছে।
এছাড়া অর্থবছরের প্রথম মাসে মোট জমার পরিমাণ ছিল ৫৩৬৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের জুলাইয়ের তুলনায় কম ৩৮.৩৭ শতাংশ।
গত আগস্টে সরকার ব্যাংকের আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার সাড়ে ৫ শতাংশ বেধে দিয়েছে। এর আগে ব্যাংকে আমানতের সুদহার ছিল ২ থেকে ৪ শতাংশ। কোনো কোনো ব্যাংকে তার চেয়েও কম। এমন পরিস্থিতিতে বেশি মুনাফার আশায় 'নিরাপদ' বিনিয়োগ হিসাবে সঞ্চয়পত্র কিনছেন সাধারণ মানুষ। কারণ ব্যাংকের চেয়ে প্রায় কয়েকগুণ বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে সঞ্চয়পত্র থেকে।
এদিকে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমিয়ে এনেছে সরকার। তবে ১৫ লাখ টাকার কম বিনিয়োগের মুনাফা একই থাকছে।
নতুন নিয়মে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র, অবসরভোগীদের জন্য নির্ধারিত পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে আগের তুলনায় এক শতাংশের বেশি কমিয়ে এনেছে।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফার সাড়ে ৭ শতাংশ, এতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণ ছাড়াও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করে থাকে সরকার। তবে সামাজিক সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে সঞ্চয়পত্রে তুলনামূলক বেশি মুনাফা দেয় সরকার। প্রতি মাসের বিক্রি থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর নিট ঋণ হিসাব হয়। এই অর্থ সরকার রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়।
সাধারণত বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নেবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। আর জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেবে ৩২ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা।
বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) সরকার আগের অর্থবছরের চেয়ে তিন গুণ বেশি ঋণ নিয়েছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে নিট প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।