নির্বাচন জটিল অসুখে আক্রান্ত: ইসি মাহবুব
নির্বাচন এখন জটিল কিছু অসুখে আক্রান্ত উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, "জটিল অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কি না।"
রোববার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, "নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমঝোতা না হলে দেশব্যাপী অরাজকতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।"
সংবিধানে বাধ্যতামূলক হলেও গত ৫০ বছরে ইসি নিয়োগে কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি বলে উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, "বাধ্যতামূলক হলেও সব সরকার এটি লঙ্ঘন করেছে।"
তিনি বলেন, "সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকলে এই আইন করা অনস্বীকার্য।"
আবার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব দলের সমঝোতা ছাড়া এ আইন করা অসম্ভব, উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ এই কমিশনার বলেন, "আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়। আইন প্রণয়ন নির্বাচনের অন্যতম বা প্রধান সোপান হলেও অবশ্যই তা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।"
৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি জানান, "ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ে ২০ শতাংশ। মানুষের এই নির্বাচন বিমুকতা আমাকে হতাশ করেছে।"
অন্যদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়ে তিনি এই ভোট বৈষম্যের কারণ বিশ্লেষণের দাবি জানান।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে কম ভোটের কারণে সব প্রার্থী জামানত হারালেও একজন প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, এই ব্যপারে মাহবুব তালুকদার বলেন, "এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। আমার মতে, নির্বাচনে একটা নতুন ধারা সূচিত হলো। যদিও নব নির্বাচিত কাউন্সিলর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলায় দুই বছরের জন্য জেলে আছে।"
উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, "এ উপ-নির্বাচনের ফল নির্বাচনের প্রতি জনগণের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ বলা হলেও ইতিবাচকভাবে বলা যায়, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা এখন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং জনসমর্থন না থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন।"