সরকারিভাবে করোনার ভ্যাকসিন বোতলজাতকরণ পেছাচ্ছে ৩ মাস
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গত আগস্টে ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে সরকারিভাবে করোনাভাইরাসের টিকা বোতলজাত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে বললেও এখন তারা এক বছরের মধ্যে বোতলজাতকরণের কথা বলছে।
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
এর আগে গত জুন মাসে ছয় মাসের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানির মাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। আগস্ট মাসে দুটি বৈঠক করে সংসদীয় কমিটি। ওই বৈঠকে ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে টিকা বোতলজাত করার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছিল।
সংসদীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. মো. আবদুল আজিজ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমাদের টার্গেট ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনে যাওয়া। জমি অধিগ্রহণে একটা সমস্যা ছিলো সেটা কেটে গেছে। তারপর ভ্যাকসিন উৎপাদনে যন্ত্রপাতি কেনা, এলসি করা, স্ট্রিলের স্ট্রাকচার তৈরিতে কিছুটা সময় তো লাগবে। আমরা আশা করছি ৯ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে ভ্যাকসিন বোতলজাত করা যাবে"।
বুধবার বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, "এসেনশিয়াল ড্রাগসের গোপালগঞ্জ শাখায় জমি আছে। সেখানে আমরা টিকা বোতলজাত করতে পারব। টিকা উৎপাদনের জন্য আমাদের আরও জায়গা লাগবে, সেই জায়গা আমরা অধিগ্রহণ করে নেব। এক বছরের মধ্যে টিকা বোতলজাত শুরু করার জন্য আমরা বলেছি"।
তিনি আরো বলেন, "টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। একজন পরামর্শক নিয়োগ দিতে হবে। কোন দেশ থেকে 'র' মেটেরিয়াল আসবে সেসব ঠিক করতে হবে। যন্ত্রপাতি কোথা থেকে আসবে সেগুলো ঠিক করতে হবে। এগুলোর জন্য একটু সময় লাগবে। সেজন্য আমরা এক বছর বলেছি। কমিটি মন্ত্রণালয়কে বলেছে, এই কাজে যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না হয়"।
সংসদীয় কমিটিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টিকার কাঁচামাল ও প্রযুক্তি আমদানির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ডায়াডিকের সঙ্গে এসেনশিয়াল ড্রাগস তিনবার ভিডিও কনফারেন্স করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আবিষ্কৃত প্রোটিন ভ্যাকসিন তৈরির আলোচনা চলছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও সরবরাহকারী বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিকভাবে প্রাক্কলিত দর প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্টিলের অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ইউনিট চালুর জন্য বিভিন্ন প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী স্টিলের অবকাঠামো তৈরি করা হবে।
শেখ সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, মুহিবুর রহমান মানিক, মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ ও আমিরুল আলম মিলন অংশ নেন।