‘বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মেটাতে ইলন মাস্কের সম্পদের ২ শতাংশই যথেষ্ট’
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালকের মতে, অতি-ধনী ব্যক্তিরা নিজেদের সম্পত্তির একটি ক্ষুদ্রাংশ দিয়ে বিশ্বের খাদ্য বিষয়ক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে পারে।
মঙ্গলবার সিএনএন এ প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন ডেভিড বিসলি। এসময় তিনি বিশ্বের দুই ধনী ব্যক্তি, জেফ বেজোস এবং ইলন মাস্কের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
"মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে থাকা ৪২ মিলিয়ন মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজন ৬ বিলিয়ন ডলার। সংখ্যাটি তাদের জন্য মোটেই জটিল নয়," যোগ করেন তিনি।
ব্লুমবার্গের মতে, টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের নেট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২৮৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ডেভিড বিসলির দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা নিবারণে তার সম্পদের মাত্র ২ শতাংশ অর্থই যথেষ্ট।
এছাড়া, প্রোগ্রেসিভ গ্রুপস ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ অ্যান্ড আমেরিকানস ফর ট্যাক্স ফেয়ারনেস অনুসারে, মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন বিলিয়নিয়ারদের মোট সম্পদ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিসলি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো বিভিন্ন সংকটের ফলে বিশ্বের অনেক দেশই রয়েছে দুর্ভিক্ষের দোরগোড়ায়। সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) রিপোর্ট অনুসারে, আফগানিস্তানের জনসংখ্যার অর্ধেক, অর্থাৎ ২২.৮ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে থাকা দেশটিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩.২ মিলিয়ন শিশু রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
এদিকে, বাইডেন প্রশাসনের নতুন প্রতিবেদনে একটি কঠোর সতর্কতা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিস্তৃত হয়ে তা সকল দেশের সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করবে।
ডব্লিউএফপি'র অনুমান অনুযায়ী, ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলে ৫.২ মিলিয়ন মানুষের জরুরি খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গত বছর থেকে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) এর বিরুদ্ধে আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এই বিরোধে হাজারো বেসামরিক নাগরিক নিহতের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ।
এই অবস্থায়, ডব্লিউএফপির মতো মানবিক সংস্থাগুলোও এইসব অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু সরবরাহ করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
"আমি জানি না তারা কোথা থেকে খাবার পাচ্ছে," বলেন বিসলি।
"আমাদের জ্বালানি শেষ। আমাদের নগদ অর্থ নেই। আমাদের অর্থের মজুদও ফুরিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমরা আমাদের ট্রাকগুলো এসব দেশে প্রবেশ করাতে পারছি না," যোগ করেন তিনি।
- সূত্র- সিএনএন