বাস, লঞ্চ বন্ধে চাপ পড়েছে রেলে, ভোগান্তির শেষ নেই
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে গত দু'দিন ধরেই বন্ধ সারাদেশের বাস ও লঞ্চ। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই দুই বাহনে যাতায়াতকারী লাখ লাখ মানুষ। চলাচলের অনিবার্য প্রয়োজনে তাই কারণে ভীড় উপচে পড়েছে রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে।
প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আজ শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। যাত্রীদের চাপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট মিলছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন অনেকে। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন চাকরির জন্য আসা পরীক্ষার্থীরা।
বেলা আড়াইটার দিকে শাওন আলী নামের এক যাত্রী গণমাধ্যমটিকে বলেন, সাধারণত তিনি বাসে চলাচল করেন। বাস বন্ধ থাকায় ট্রেনে করে বাড়িতে যেতে কমলাপুরে এসেছেন। টিকিট না পেয়ে তিনি বেশ বিপাকে পড়েছেন।
রেলপথে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত ২২টি বগির ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কোনো স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছে না সংস্থাটি। টিকিটের বাইরেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
অন্য ছুটির দিনের তুলনায় আজ যাত্রীদের বেশি চাপ ছিল বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন।
তিনি প্রথম আলোকে বলেন, "গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রেলের ওপর চাপ পড়েছে। অন্য শুক্রবারে এত যাত্রী দেখা যায়নি। মহামারির কারণে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। এ জন্য মানুষ সমস্যায় পড়েছে। তবে যেসব যাত্রীর ঘরে ফেরা খুবই জরুরি, তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি করা হয়। ওই পদ্ধতিতে সকাল থেকেই টিকিট বিক্রি হচ্ছে।"
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী চলমান পাবলিক বাস ও ট্রাক ধর্মঘটের মধ্যে আজ লঞ্চ মালিকরা আজ জানিয়েছেন যে, তারা লঞ্চ চালাবেন না।
বিশ্ববাজারের অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে গত বুধবার সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করে। এর প্রতিবাদে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা ভাড়া বৃদ্ধি অথবা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেয়।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে আজ সকালে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।
এছাড়াও চলমান পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আজ রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজির দামও বেড়ে গেছে।
এদিকে জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত মূল্য প্রত্যাহার অথবা পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর আগ পর্যন্ত দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্রাক মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।
আজ শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার বাসভবনে বৈঠক শেষে ফেডারেশনের নেতারা বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন তারা।