করোনা সন্দেহে বিদেশফেরত যাত্রীর গোপনীয়তা লঙ্ঘন অপরাধ: আইইডিসিআর
ভারতের কলকাতা থেকে আসা অসুস্থ এক বাংলাদেশিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ‘করোনা রোগী’ হিসেবে শনাক্ত করে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরী। এতে ওই যাত্রীর ছবি ও পাসপোর্টও তুলে দেন। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে পোস্টটি তুলে নেন এ সরকারি কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় বিদেশফেরত যাত্রীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন অপরাধ বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে অবহিত হয়েছি যে, কোনো এক স্থল বন্দরে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা বিদেশ থেকে আগত একজন যাত্রীকে কোভিড-১৯ সংক্রমিত সন্দেহ করে তার ব্যক্তিগত পরিচয় সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে দিয়েছেন। এ ধরনের অপেশাদার আচরণ শুধু নৈতিকতা বিরোধীই নয়, সংবেদনশীল সরকারি তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন সংক্রান্ত সরকারি চাকুরি বিধির লঙ্ঘন। কোনো ব্যক্তি কোভিড-১৯ সংক্রমিত কি না তা নিশ্চিত করার ও প্রকাশ করার সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে আইইডিসিআর। সংশ্লিষ্ট সকলকে আমরা এ বিষয়টি আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ শনাক্তের জন্য সকল পর্যায়ের সরকারি-বেসরকাররি কর্মকর্তা তথা সর্বস্তরের জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে সহযোগিতা করতে গেলে তা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াকেই বিপন্ন করবে, কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিজের ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার ভয়ে তার তথ্য ও অবস্থান গোপন করতে পারেন। এ ধরনের বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধৈর্যশীল ও শান্ত পরিবেশে পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতা দিয়ে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আইইডিসিআর কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কিংবা স্থানীয় সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে নিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যশোর প্রতিনিধি জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন। তিনি জানান, বেনাপোলে কোনো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। একজন সরকারি কর্মকর্তার এই ধরনের স্ট্যাটাস বিব্রতকর ও ভিতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তাকে তার বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়েছে এবং ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।