সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চায় না: দীপু মনি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করলে শিক্ষা-ক্ষেত্র আরও ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে সরকার তা বন্ধ করতে চায় না, জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আজ (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইমপেরিয়াল কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, "আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। টিকা নিয়ে যেনো শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসে সেটিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা ১২ বছরের কম বয়সী তাদের জন্য হয়তো এক্ষেত্রে একটু অসুবিধা হতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়েও আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।"
নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। "আমাদের ধারণা ছিলো মার্চ এপ্রিলে সংক্রমণ বাড়বে। কিন্তু জানয়ারির গোড়ার দিকেই তা বাড়ছে। কাজেই আমাদের যে পরিকল্পনা তাতে কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্ট দরকার হবে," বলেন তিনি।
শিখন ঘাটতি পূরণে নিরাময়মূলক ক্লাস নেওয়ার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "দেড় বছরে লেখাপড়ায় যে ঘাটতি হয়েছে, সেটি পূরণের জন্য রেমিডিয়াল ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করছি আমরা। কিন্তু আমাদের অনেক সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। গত দেড় বছর শিক্ষার্থীরা মুখোমুখী ক্লাস করতে পারেনি। শ্রেণিকক্ষে তাদের পাঠদান করানো যায়নি। এতে যে ঘাটতি হয়েছে তাতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মাধ্যমে পুরণ করতে হবে।"
করোনা সংক্রমণ বাড়লে শিক্ষার ক্ষতিই বেশি হবে উল্লেখ করে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দেন তিনি।
রজতজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, "চতৃর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় প্রযুক্তি জ্ঞানের সঙ্গে সঠিক দক্ষতা থাকতে হবে। সেইসাথে থাকতে হবে মানসিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ।"
"আমাদের শিক্ষার্থীদের তৈরি হতে হবে খুব ছোটবেলা থেকে, পরিবারে মাধ্যমে। পরিবার যেমন শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলে তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি মানসিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ না থাকে তাহলে শিক্ষার্থীকে সেভাবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়," বলেন তিনি।
এই উদ্দেশ্যেই নতুন কারিকুলাম করা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। নতুন কারিকুলাম শুধু পরীক্ষা নির্ভর ও সনদ সর্বস্ব না হয়ে যাতে আনন্দময়, দক্ষতা নির্ভর, প্রয়োগমূলক হতে পারে সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
"টেকসই উন্নয়নের ১৭টি লক্ষ্যে মধ্যে শিক্ষা চার নম্বর। শিক্ষার মধ্যে কতগুলো লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। একটি হচ্ছে সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা। সেই শিক্ষা থেকে কেউ যেন বাদ না পড়ে। আরেকটি হচ্ছে সমতা বা সাম্যের জায়গা তৈরি করা। এর সঙ্গে মানসম্মত শিক্ষা, আরেকটি হচ্ছে জীবনব্যাপী শিক্ষা। এই আন্তর্জাতিক অঙ্গিকারগুলো আমাদের পুরণ করতে হবে" যোগ করেন তিনি।
এদিকে, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড-১৯ এ আরও একজনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ১১৬টি নতুন পজিটিভ কেস ধরা পড়েছে।
সংক্রমণের হার বর্তমানে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এক সেট বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে সরকার।
শপিং মল, দোকান ও বাজার রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে এবং করোনাভাইরাসের পুনঃসংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে গণপরিবহন।