শাবিপ্রবি সংকট নিরসনে সিলেট পৌঁছেছেন দীপু মনি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এসইএসটি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল আজ (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেটে পৌঁছেছে।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে তারা বিমানযোগে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা শিক্ষামন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল ইসলাম নওফেল এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ তার সঙ্গে ছিলেন।
সফর সূচি অনুযায়ী, দীপু মনি সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট সার্কিট হাউসে পৌঁছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত শেষ করে সিলেট সার্কিট হাউসে যান তারা।
বিকেল ৩টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে সিলেট সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন তারা। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শাবিপ্রবির চলমান সংকট সমাধানের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শিক্ষামন্ত্রী ও তার দল।
রাত ৮টা ২০ মিনিটে একটি ফ্লাইটে করে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তারা।
শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন হলের ছাত্রীরা।
এই দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। সেদিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
লাঠিচার্জের পর দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। এরপর রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ওই রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুরের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে অনশন শুরু করেন ২৮ শিক্ষার্থী। ২০ জানুয়ারি উপাচার্য ভবনের ফটকে ব্যারিকেড দিয়ে বাইরের মানুষের প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে শাবিপ্রবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের ব্যারিকেড তুলে নেন।
অনশন ভাঙানোর পর অধ্যাপক জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, "এখানে আসার আগে আমার সঙ্গে সরকারের উচ্চমহল থেকে কথা হয়েছে। তারা আমাকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের আশ্বাস পেয়েই আমি এখানে এসেছি। আমি তাদের অনুরোধ করব, তারা আমাকে যে কথা দিয়েছেন সে কথাগুলো যেন রক্ষা করেন। আমি আর এই ছাত্রদের ভেতর কোনো পার্থক্য নেই। আমাকে দেওয়া কথা না রাখলে সেটা কেবল আমার সঙ্গে না, এই দেশের সমস্ত প্রগতিশীল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।"