ইইউ'র সদস্যপদ পাওয়ার আবেদনপত্রে সই করেছেন জেলেনস্কি
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদনপত্রে সই করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি তার কার্যালয়ে আবেদনপত্র সইয়ের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে এ সংক্রান্ত পেপারওয়ার্ক ব্রাসেলসে ইইউ'র সদর দপ্তর পাঠানো হচ্ছে।
বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইউক্রেনকে ইইউ'র সদস্য পদ দেওয়ার আহ্বান জানানোর পর আজ এই ঘোষণা আসে।
এর আগে জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, "নতুন একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনকে দ্রুত ইইউ'র সদস্য করে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা,"
"আমাদের লক্ষ্য সব ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে এক হওয়া। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একসঙ্গে পথ চলা। আমি জানি এটি ন্যায্য, আমি নিশ্চিত এটি সম্ভব"।
এই ভিডিও বার্তায় রাশিয়ার সেনাদের অস্ত্র ফেলে ইউক্রেন ত্যাগের আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল ইউক্রেন সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে সংঘাত অবসানের আলোচনায় কোনো চুক্তি হয়নি, তবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে উভয়পক্ষ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটির অর্থনীতি চাপের মুখে পড়ে। এরপর টিভিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র ব্যবস্থাকে যুদ্ধের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন পুতিন। এরপরই আলোচনার টেবিলে বসে ইউক্রেন-রাশিয়া।
জেলেনস্কির এক শীর্ষ উপদেষ্টা মায়খাইলো পদোলিয়াক জানিয়েছেন, ইউক্রেন বেলারুশের সীমান্তের কাছে অনুষ্ঠিত এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি আর অদূর ভবিষ্যতে আবারও এই যুদ্ধের দ্বিতীয় রাউন্ডের আশঙ্কা।
পুতিনের একজন শীর্ষ সহকারি আর ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেন, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা এই আলোচনা চলে, পারস্পরিক সমঝোতা সম্ভব এমন কিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। তিনি জানান, সামনের দিনগুলোতে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন তারা।
"অস্ত্র ফেলে দিন। এখান থেকে চলে যান। আপনাদের কমান্ডারদের বিশ্বাস করবেন না। যারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তাদের বিশ্বাস করবেন না। নিজেদের জীবন বাঁচান," আলোচনার আগের দিন রাশিয়ান সেনাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছিলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত সাড়ে চার হাজারের বেশি রাশিয়ান সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের আবাসস্থল নয় ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অবকাঠামোর ওপর হামলা চালানো করা হয়েছে, মস্কো এমন দাবি করলেও, জেলেনস্কি বলছেন রাশিয়ার আক্রমণে এখন পর্যন্ত ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
জেলেনস্কি ওই ঘোষণায় আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধ বিষয়ক অভিজ্ঞতা আছে এমন বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিয়ে সদস্য বাড়াতে ইউক্রেনের পুরুষদের বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
"প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় আমি বলেছিলাম আমরা সবাই প্রেসিডেন্ট। কারণ আমাদের প্রত্যেকের রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব আছে। এখন এমন অবস্থা চলে এসেছে যেখানে আমরা সবাই একেকজন যোদ্ধা। আমি বিশ্বাস করি আমরা প্রত্যেকে জয়ের মুখ দেখবো," বলেন তিনি।